চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কস কারখানা। ছবি: পাপন চৌধুরী।
দেশের দ্রুত গতির রেলযাত্রার সঙ্গে এ বার যোগসূত্র তৈরি হতে চলেছে চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানার। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘অমৃত ভারত’ ট্রেনের জন্য ইঞ্জিন তৈরির বরাত দেওয়া হয়েছে এই কারখানাকে। বরাত পাওয়া ইঞ্জিনগুলি চলতি অর্থবর্ষেই তৈরি করে রেল মন্ত্রকের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে সংস্থা সূত্রে খবর। ইতিমধ্যে ইঞ্জিন তৈরির প্রাথমিক কাজও শুরু হয়েছে। ‘অমৃত ভারত’ ট্রেনের ইঞ্জিন তৈরির বরাত পাওয়া এই সংস্থার কাছে গর্বের বলে দাবি করেছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। খুশি সংস্থার শ্রমিক সংগঠনগুলিও। তবে লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য পর্যাপ্ত কর্মী নিয়োগ প্রয়োজন বলেও দাবি তাঁদের।
বন্দে ভারত ট্রেনের চেয়ে অপেক্ষাকৃত কম স্বাচ্ছন্দ্যযুক্ত, কিন্তু তারই মতো দ্রুত গতিসম্পন্ন ‘অমৃত ভারত’ ট্রেন চালু করেছে রেল মন্ত্রক। এই ট্রেনে যে ইঞ্জিন ব্যবহার করা হবে, সেগুলি তৈরি করবে চিত্তরঞ্জন রেল কারখানা। কারখানার সিনিয়র ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রমোদ ক্ষেত্রী বলেন, ‘‘আমরা প্রাথমিক ভাবে ১০০টি ইঞ্জিন তৈরির বরাত পেয়েছি। প্রাথমিক কাজও শুরু করা হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, বন্দে ভারত ট্রেনের ইঞ্জিনে যে কারিগরি কৌশল রয়েছে, তার সবই এই ইঞ্জিনগুলিতে থাকবে।
কারখানা সুত্রে জানা গিয়েছে, এই ইঞ্জিনগুলি ১০ হাজার অশ্বশক্তি ক্ষমতাসম্পন্ন। ট্রেনে সামনে ও পিছনে মোট দু’টি ইঞ্জিন থাকবে। সংস্থা কর্তৃপক্ষ জানান, এই ইঞ্জিনগুলিতে এমন কারিগরি কৌশল রয়েছে যে দু’টি ইঞ্জিনই এক সঙ্গে এক জন চালক পরিচালনা করতে পারবেন। এই ইঞ্জিন দ্রুত গতি বাড়াতে পারবে, আবার দ্রুত থামতেও পারবে। প্রমোদ ক্ষেত্রী জানান, চলতি অর্থবর্ষে প্রায় ৭০০টি ইঞ্জিন তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এর মধ্যে ১০০টি অমৃত ভারতের ইঞ্জিন রয়েছে। এই বরাত পাওয়া কারখানার জন্য খুবই গর্বের বিষয় বলে মনে করেন তিনি।
খুশি সংস্থার কর্মীরাও। বাপ্পা কুণ্ডু নামে এক কর্মীর কথায়, ‘‘কারখানার উন্নতি হলে আমাদের ভালই লাগে।’’ বিপুল সংখ্যক ইঞ্জিন তৈরির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে কর্মী নিয়োগের দাবি তুলেছেন শ্রমিক নেতারা। সিটু অনুমোদিত সংস্থার লেবার ইউনিয়নের সম্পাদক রাজীব গুপ্ত বলেন, ‘‘প্রতি বছরই ইঞ্জিন তৈরির লক্ষ্যমাত্রা বেড়ে চলেছে। শ্রমিক-কর্মীরা দিনরাত এক করে লক্ষ্যপূরণ করছেন।’’ তাঁর দাবি, হাজারেরও বেশি শূন্যপদ থাকলেও, সেগুলি পূরণের কোনও উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের। অবিলম্বে সেগুলি পূরণের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। আইএনটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ সিংহের বক্তব্য, ‘‘আগেও দ্রুত গতির ইঞ্জিন তৈরি হয়েছে। অমৃত ভারতের ইঞ্জিন তৈরির বরাত পেয়ে আমরা খুশি। তবে শ্রমিক-কর্মীদের চাকরির নিরাপত্তা নিয়ে কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগী হতে হবে।”