ফুটেজের একটি দৃশ্য। নিজস্ব চিত্র
আসল দু’হাজার টাকার নোট চেনাতে গিয়ে বেশ কয়েকটি নোট পকেটে ‘ঢুকিয়ে’ নিয়েছে কেপমার। পাশের দোকানে আবার ডলার আর টাকার পার্থক্য বোঝানোর ফাঁকে বেশ কয়েক হাজার টাকা ‘হাতসাফাই’ হয়ে গিয়েছে। এমনই অভিযোগ উঠেছে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপরে শক্তিগড় থানার আমড়া গ্রামের ল্যাংচা-হাটে।
ব্যবসায়ীদের দাবি, তাঁরা যতক্ষণে বুঝেছেন তাঁদের বোকা বানানো হয়েছে, ততক্ষণে টাকা নিয়ে ‘খরিদ্দারে’রা পগারপার। তবে রবিবার রাতের ওই ঘটনা নিয়ে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ করেননি তাঁরা। শক্তিগড় থানা ক্লোজ় সার্কিট ক্যামেরার (সিসি ক্যামেরা) ফুটেজ জোগাড় করে তদন্ত শুরু করেছে।
জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, “ব্যবসায়ী যদি অপরিচিত খরিদ্দারকে টাকা গুনতে দিয়ে নিশ্চিন্তে থাকেন, তা হলে যা ঘটার, তাই ঘটেছে। এ ক্ষেত্রে খরিদ্দার বিদেশি হওয়ায় ব্যবসায়ী আরও নিশ্চিন্ত ছিলেন বলে মনে হচ্ছে।’’ ওই এলাকার ব্যবসায়ী সংগঠনের সম্পাদক শামিম মণ্ডলের দাবি, “ঘটনার প্রায় এক ঘণ্টা পরে বিষয়টি জানা যায়। কিন্তু অজ্ঞাত পরিচয়ের নামে তো আর অভিযোগ করা যায় না। তবে পুলিশকে তদন্ত করতে বলা হয়েছে।’’
ব্যবসায়ীরা জানান, রবিবার সন্ধ্যায় প্রতিটি দোকানেই ভিড়ে ঠাসা ছিল। তার মধ্যেই এক বিদেশি যুবক ও মুখে কাপড় ঢাকা এক মহিলা দোকানে ঢোকেন। প্রভাশিস রায় নামে এক ব্যবসায়ীর দাবি, “দু’জনকেই বিদেশি বলে মনে হয়। ৫০ টাকার শোনপাপড়ি কিনে দু’হাজার টাকা দেন তাঁরা। বাকি টাকা ফেরত দেওয়ার সময়ে বেশ কয়েকটি ডলার দেখান। তার পরেই ডলার আর টাকার পার্থক্য বোঝানোর ফাঁকে কয়েকটি নোট পকেটে ভরে নেন বলে ফুটেজে দেখা যাচ্ছে।’’ মিলন মল্লিক নামে আর এক ব্যবসায়ীর দাবি, “আমার দোকানেও দু’হাজার টাকার নোট দিয়ে একটি বোতল জল কেনেন। টাকা ফেরত দেওয়ার সময়ে ক্যাশবাক্স থেকে সবার সামনেই টাকা হাতান। তখন কিছুই বুঝিনি।’’ ওই দোকানের ম্যানেজার জানান, চারটে পাঁচশো টাকার নোট দিয়ে দু’হাজার টাকার নোট চান ওই বিদেশি। দু’হাজার টাকার নোট নেই জানানোর পরে, তিনি বলেন, ‘ক্যাশবাক্সে অনেকগুলি পাঁচশো টাকার নোট আছে। সেগুলি কী ভাবে আসল-নকল চিনবেন?’ এর পরেই ক্যাশবাক্স থেকে ৫০০ টাকার নোটের বান্ডিল ওই ব্যক্তির হাতে তুলে দেওয়া হয়। তিনি ফেরত দেওয়ার পরে দেখা যায়, বেশ কয়েকটি নোট কম রয়েছে।
শক্তিগড় থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যবসায়ীরা তাঁদের কাছে দাবি করেছেন, ওই দু’জনই ইংরেজিতে কথা বলছিল। বিদেশি ভেবে কোনও সন্দেহ করেননি তাঁরা। ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, দু’জনেই দোকানে হেঁটে ঢুকছেন। তবে বেরিয়ে যাওয়ার পরেও কোন গাড়িতে উঠলেন তার রেকর্ড নেই। পুলিশ জানিয়েছে, রাস্তার উপরের সিসি ক্যামেরার ‘ফুটেজ’ জোগাড়ের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।