এমন ঘর ঘিরে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র
একাধিক কর্মী আবাসন ও জমি দখল করে দলীয় কার্যালয় তৈরি করা হয়েছে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ উঠেছে বার্নপুর ইস্পাত শহরে। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। বিধায়ক জানিয়েছেন, ইস্কো কর্তৃপক্ষের নজরে এনে পদক্ষেপ করার পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় ইস্পাতমন্ত্রীকেও বিষয়টি জানাবেন তিনি। তবে বিধায়কের এই অভিযোগ অসত্য বলে দাবি বার্নপুর ইস্পাত শহরের তৃণমূলের কাউন্সিলর অশোক রুদ্রের। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, বিজেপির নেতা-কর্মীরাই এই বেনিয়মের সঙ্গে জড়িত। তৃণমূল এমন কাজ করে না। এ দিকে, ইস্কো কর্তৃপক্ষের দাবি, বার্নপুর শহর জুড়ে ইস্কোর জমি, আবাসনকে দখলমুক্ত করার কাজ চলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বার্নপুর ইস্কোর জমি, আবাসন দখল করে রাখার অভিযোগ নতুন কিছু নয়। এর আগে বহু বারই এই অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন কারখানার কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলি। নানা মহল থেকে এমনও অভিযোগ করা হয়েছে, এক দল দালাল আবাসান ও জমি দখল করে ভাড়া দিয়ে অবৈধ কারবার করছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইস্কো কর্তৃপক্ষ মাঝেমধ্যে জমি ও আবাসনের দখল উচ্ছেদ করেন। কিন্তু পরে আবার সে সব দখল হয়ে যায়। এ বার তেমনই অভিযোগ তুলে পথে নেমে সরব হয়েছেন বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। এই অবৈধ কারবারের নেপথ্যে তৃণমূল নেতৃত্ব সরাসরি জড়িত আছেন অভিযোগ করেছেন তিনি। অগ্নিমিত্রার অভিযোগ, “বার্নপুর ইস্কোর শতাধিক আবাসন ও প্রচুর জমি দখল করে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা একাধারে দলীয় কার্যালয় বানিয়েছেন। অন্য দিকে ভাড়া দিয়ে অর্থ উপার্জন করছেন।” অগ্নিমিত্রার দাবি, তিনি বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি করে কেন্দ্রীয় ইস্পাতমন্ত্রীর কাছে পাঠাচ্ছেন।
এ দিকে, বিজেপি বিধায়কের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের কাউন্সিলর অশোক রুদ্রের মন্তব্য, “অভিযোগ একেবারে অসত্য। বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন বিধায়ক। এমন একটি উদাহরণ উনি দিতে পারবেন না যে, ইস্কো আবাসন দখল করে তৃণমূলের কার্যালয় হয়েছে। বিজেপির কর্মী-সদস্যেরাই এ সব করেন।”
বার্নপুর নিউটাউন এলাকায় দেখা গেল, একটি বাড়িতে তৃণমূল ভবন ও তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয় লেখা আছে। রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া ব্যানার সাঁটা। আবার একটি টালির ছাউনি দেওয়া বাড়িতে মমতার ছবি দেওয়া ‘তৃণমূল ইউথ কংগ্রেস’ লেখা আছে। যদিও এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি অশোক। তবে ইস্কোর ‘এস্টেট’ বিভাগের জিএম ভাস্কর কুমার বলেন, “নিয়ম করেই দখলদার উচ্ছেদের অভিযান চলে।” ইস্কো সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি সেল কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শহরে বেশ কিছু বহুতল কর্মী আবাসন তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে। সে কাজের জন্য যাবতীয় দখল উচ্ছেদের কাজ জারি আছে।