আসানসোলের বিশ্ববিদ্যালয়ে বেনজির অচলাবস্থা। — নিজস্ব চিত্র।
হুঁশিয়ারি আগেই দিয়েছিলেন। এ বার বাড়তি বিভিন্ন কমিটির দায়িত্ব থেকে একসঙ্গে ইস্তফা দিলেন আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২ অধ্যাপক। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাধন চক্রবর্তীর অপসারণ চেয়ে আন্দোলন চলছিলই। এ বার বিভিন্ন কমিটি থেকে গণইস্তফার জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ে অভূতপূর্ব অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। সজলকুমার ভট্টাচার্য, প্রদীপকুমার দাস, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ মোট ২২ অধ্যাপক তাঁদের অতিরিক্ত দায়িত্বভার থেকে অব্যাহতি চেয়ে শনিবার চিঠি পাঠিয়েছেন ডেপুটি রেজিস্ট্রারকে।
শুধু পড়ানোই নয়। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ক্লাস নেওয়ার পাশাপাশি, আরও অতিরিক্ত কিছু দায়িত্ব পালন করতে হয়। কেউ থাকেন বিশ্ববিদ্যায়ের ক্রীড়া কমিটির দায়িত্বে। কারও দায়িত্ব থাকে ক্যান্টিন কমিটি দেখভালের। এ বার উপাচার্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে সেই বাড়তি দায়িত্বই ছাড়তে শুরু করেছেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যপকেরা। দায়িত্ব ছাড়ার চিঠি ডেপুটি রেজিস্ট্রার ছাড়া গিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে। চিঠি পেয়ে উপাচার্য বলেন, ‘‘কয়েক জন অধ্যাপক বাড়তি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে চিঠি দিয়েছেন। আমি তাঁদের উদ্দেশে বলি, বিশ্ববিদ্যালয় সচল রাখতে সবাইকে নিয়ে চলতে হয়। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমি সব সময় আলোচনা করে নিই। সামান্য ভুল বোঝাবুঝির কারণে অধ্যাপকেরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমি অনুরোধ করব, তাঁরা তাঁদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসুন। বিশ্ববিদ্যালয় সুন্দর ভাবে যেন চলে তার ব্যবস্থা করুন।’’
গত কয়েক দিন ধরেই আসানসোলের বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার বনাম উপাচার্যের সংঘাত চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একটি অংশ দাঁড়িয়েছেন রেজিস্ট্রারের পাশে। তৃণমূল সমর্থিত ‘ওয়েবকুপা’ উপাচার্যের অপসারণের দাবি তুলেছে। উপাচার্যকে অসহযোগিতার বার্তাও দেওয়া হয়েছে। বুধবারই বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাঘরে সাংবাদিক বৈঠকে এ কথা জানিয়েছিলেন ওয়েবকুপার কাজি নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক সজল ভট্টাচার্য। এ বার সেই সজলের নেতৃত্বেই কমিটির বাড়তি দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে চেয়ে চিঠি পাঠালেন ২২ জন অধ্যাপক। বাকি পাঁচ জনও কয়েক দিনের মধ্যেই বাড়তি দায়িত্ব ছাড়বেন বলে দাবি আন্দোলনরত অধ্যাপকদের। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে তৈরি হয়েছে অচলাবস্থা।