অনুব্রতের শারীরিক সমস্যার কথা মাথায় রেখেই নাকি তাঁকে জেলের হাসপাতালের একটি কক্ষে রাখা হয়েছে। ফাইল চিত্র।
আসানসোলের জেলে অনুব্রত মণ্ডলের কারাবাস কেমন হতে চলেছে? তা নিয়ে বেজায় চিন্তায় রয়েছেন বীরভূমের তৃণমূল নেতার ঘনিষ্ঠরা।
বীরভূমের দাপুটে তৃণমূলনেতার আগামী ১৪ দিনের ঠিকানা আসানসোলের সংশোধানগার। কিন্তু জেল সূত্রে খবর, গোটা সংশোধনাগার চত্বরে একটিও কমোড অর্থাৎ পশ্চিমী ধাঁচের শৌচাগারের ব্যবস্থা নেই। যা নানা শারীরিক সমস্যায় ভোগা অনুব্রতের কাছে একটা ‘বড় সমস্যা’ হয়ে উঠতে পারে বলে উদ্বিগ্ন তাঁর ঘনিষ্ঠরা।
অনুব্রত বরাবরই তাঁর শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার কথা জানিয়ে এসেছেন সিবিআইকে। শ্বাসকষ্ট, মধুমেহ রোগের মতো সমস্যার পাশাপাশি অর্শের সমস্যাতেও ভোগেন তিনি। যার জন্য নানা সাবধানতা মেনে চলতে হয় বীরভূমের তৃণমূল নেতাকে। বুধবার অনুব্রতের এই শারীরিক সমস্যার কথা মাথায় রেখেই সিবিআই আদালতের বিচারক তাঁকে সবরকম ওষুধ এবং শ্বাসকষ্ট প্রশমনের যন্ত্র জেলে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেন। কিন্তু তাতে তাঁর কিছু শারীরিক সমস্যার সমাধান হলেও একটি বড় সমস্যা জিইয়ে থাকবে। আর সেই সমস্যা হল জেলের কক্ষে কমোডের ব্যবস্থা না থাকা। দরকার পড়লে প্রিয় নেতা কী ভাবে শৌচাগার ব্যবহার করবেন, তা ভেবে পাচ্ছেন না ঘনিষ্ঠরা। জেল কর্তৃপক্ষ কোনও বিশেষ ব্যবস্থা করবে কি না তা নিয়েও চিন্তার কথা প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ।
জেল সূত্রে খবর, অনুব্রতকে আপাতত জেলের কক্ষে রাখা হয়নি। আসানসোল জেলের ভিতরে যে হাসপাতাল তার দু’টি ঘরের একটিতে রয়েছেন অনুব্রত। এই ঘরে বেড আছে। রয়েছে ঘরের লাগোয়া আলাদা শৌচাগারও। তবে সেটি ভারতীয় ধাঁচের। সিবিআই বিচারক বলে দিয়েছিলেন, জেলে অনুব্রতের শারীরিক সমস্যা হলে হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাঁকে যাবতীয় সহযোগিতা করবেন। তাই আপাতত অনুব্রতকে রাখা হয়েছে জেল হাসপাতালের বেডেই।
হাসপাতালের জেলের এই ঘরগুলিকে বলা হয় আইসোলেশন রুম। অতিমারি পরবর্তী সময় থেকে কয়েদিদের কোভিড পরীক্ষা হওয়া এবং তার রিপোর্ট আসা পর্যন্ত এই ঘরেই থাকেন। তার পর তাঁদের রিপোর্ট নেগেটিভ এলে তাঁদের জেলের অন্য সেলে নিয়ে যাওয়া হয়। বুধবার বিকেলে এই ঘরে ঢোকার সময়ে অনুব্রতেরও কোভিড পরীক্ষা করানো হয়েছিল। সূত্রের খবর, সেই রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। তবে তার পরও অনুব্রত আগামী ১৪ দিন এই আইসোলেশন রুম অর্থাৎ নিভৃতবাসের ঘরেই থাকবেন বলে জেল সূত্রে খবর। তৃণমূল নেতার অসুস্থতার দিকে নজর রেখেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানা গিয়েছে ওই সূত্রে।
উল্লেখ্য, এর আগে কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়া আরেক তৃণমূল নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জেল হেফাজতের পর তাঁকে জেলের কক্ষের মেঝেতে শুতে হয়েছিল। এমনকি আলাদা শৌচালয়ের ব্যবস্থাও ছিল না তাঁর জন্য। পরে পার্থের অনুরোধে তাঁকে জেলের সেলে একটি ক্যাম্প খাট দেওয়া হয়। অনুব্রত অবশ্য হাসপাতালের ঘরে শয্যা এবং শৌচালয় দুই-ই পেয়েছেন। যদিও জেল সূত্রে খবর, অনুব্রত তাঁর জন্য কোনও বিশেষ সুযোগ সুবিধা চাননি। বরং অন্যান্য কয়েদির মতোও তিনিই বুধবার জেলের রুটি সবজি খাবেন।