ফাইল চিত্র।
প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বণিকসভা দুর্গাপুরে জাতীয় মানের একটি আধুনিক বাস টার্মিনাল তৈরির আর্জি জানিয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের পরিবহণ সচিবকে বিষয়টি দেখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশের পরে প্রায় আড়াই বছর কেটে গেলেও এ পর্যন্ত আধুনিক বাসস্ট্যান্ড তৈরি হয়নি শহরে।
২০১৩-য় আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এডিডিএ) বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা বিওজিএল লাগোয়া একটি জায়গায় আন্তঃরাজ্য ও দূরপাল্লার বাসের জন্য একটি আধুনিক বাস টার্মিনাল গড়ার পরিকল্পনা নিয়েছিল। যাত্রী ও বাসকর্মীদের রাতে থাকার জায়গা, রেস্তরাঁ, এটিএম, অফিস, দোকান, পেট্রল পাম্প-সহ অন্য নানা সুবিধা-যুক্ত বাস টার্মিনাল গড়ার জন্য প্রকল্পের নকশা চেয়ে দরপত্রও ডেকেছিল এডিডিএ। কিন্তু এর পরে তা আর বাস্তবায়িত হয়নি। এই পরিস্থিতিতে ২০১৮-র ৫ মার্চ দুর্গাপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বণিকসভার প্রতিনিধি কবি দত্ত দুর্গাপুরে আধুনিক বাসস্ট্যান্ড গড়ার আর্জি জানান। মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি তৎকালীন পরিবহণ সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখার নির্দেশ দেন।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে, বিষয়টি নিয়ে দুর্গাপুরে বৈঠক হয়েছিল। বিওজিএল লাগোয়া প্রায় ৪৫ একর জমি রয়েছে এডিডিএ-র। তারই একাংশে টার্মিনাল গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এডিডিএ-কে বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) পাঠানোর জন্য বলা হয়। প্রাথমিক ভাবে একটি ডিপিআর পাঠায় এডিডিএ। ২০১৯-এ তৎকালীন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী দুর্গাপুরে এসবিএসটিসি-র এক অনুষ্ঠানে জানান, এডিডিএ-র প্রস্তাব তিনি পেয়েছেন। যথাসময়ে অনুমোদন দেওয়া হবে। কিন্তু পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা যায়, সেই প্রস্তাব পরীক্ষার পরে, উপযুক্ত মনে না হওয়ায় কাজ এগোয়নি।
এডিডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, পরবর্তীতে পরিবহণ দফতরের পক্ষ থেকে ‘রাইটস’-কে দিয়ে ডিপিআর তৈরির পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু সেই অর্থ কে দেবে, এডিডিএ না পরিবহণ দফতর, তা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। বৃহস্পতিবার এডিডিএ-র চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাইটসকে দিয়ে ডিপিআর তৈরির কথা মৌখিক ভাবে পরিবহণ দফতর জানিয়েছিল। লিখিত ভাবে নির্দিষ্ট কোনও নির্দেশিকা এ পর্যন্ত আসেনি। ফলে, বিষয়টি থমকে আছে। পরিবহণ দফতর থেকে নির্দেশিকা পেলেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’ তবে, দুর্গাপুর থেকে পুরী, শিলিগুড়ি, কলকাতা, বর্ধমান, কল্যাণী, কৃষ্ণনগর, বোলপুর, বহরমপুর, মালদহ, নবদ্বীপ, আসানসোল, বরাকর, চিত্তরঞ্জন-সহ বিভিন্ন রুটের বাস চলাচল করে। এ ছাড়াও রাঁচি, দেওঘর, জামশেদপুর, ভুবনেশ্বর প্রভৃতি রুটের বাসও দুর্গাপুর হয়ে চলাচল করে। এই পরিস্থিতিতে দুর্গাপুরে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল দ্রুত তৈরি করাটা অত্যন্ত জরুরি বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ।