যাতায়াত বন্ধ ইডেন ক্যানালের সেতুতে। হেঁটে পারাপার করছেন অনেক যাত্রী। ছবি: উদিত সিংহ
ইডেন ক্যানালের সেতু সংস্কার শুরু হল বৃহস্পতিবার। বর্ধমান-আরামবাগ রোডের উপরে কৃষক সেতুর আগে এই সেতুতে বাস যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। তার জেরে বর্ধমান শহর, দক্ষিণ দামোদর এলাকার সঙ্গে হুগলি ও বাঁকুড়ার একাংশের সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। প্রথম দিনেই যাত্রীদের হয়রানি ও সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছে বলে অভিযোগ।
জেলা প্রশাসনের দাবি, টানা ১১ দিন ধরে সেতু সংস্কার চলবে। রবিবার পর্যন্ত ওই সেতু দিয়ে সাইকেল চলাচলও নিষিদ্ধ করেছে প্রশাসন। বুধবার রাতে জেলাশাসক বিজয় ভারতী, পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়-সহ পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরা ইডেন ক্যানালের সেতুটি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। তার পরে জেলাশাসক নোটিস দিয়ে জানান, ওই রাস্তা দিয়ে যাতয়াতকারী বর্ধমানমুখী সব বাস আপাতত দাঁড়াবে খণ্ডঘোষের পলেমপুর ফাঁড়ির কাছে। বর্ধমান শহরের তেলিপুকুর মোড় থেকে কোনও বাস কৃষক সেতুর দিকে যাবে না।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছিল, বাঁকুড়া থেকে কলকাতামুখী বাসগুলি সগড়াই মোড় দিয়ে জামালপুর পাঠানো হবে। সেখান থেকে আঝাপুর মোড় হয়ে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ধরবে মালবাহী ভারী যানগুলি। কিন্তু পূর্ত দফতর জানায়, সগড়াই মোড় থেকে জামালপুর পর্যন্ত তিনটে ছোট সেতু রয়েছে। যেগুলি খুবই দুর্বল। তার পরেই জেলাশাসকের নির্দেশ, বাঁকুড়ার ওই গাড়িগুলি আরামবাগ হয়ে কলকাতা পাঠানো হবে। বর্ধমান শহরের পূর্ত ভবন ও তেলিপুকুর মোড় দিয়েও কোনও মালবাহী গাড়ি কৃষক সেতুর দিকে যেতে পারবে না। সিদ্ধান্তটি বাঁকুড়া ও হুগলি জেলা প্রশাসনকেও জানানো হয়েছে। জেলাশাসক বলেন, “প্রয়োজন হলে সদরঘাটে দামোদরের উপর থাকা বালিঘাট বন্ধ করে দেব।’’
ছোট যাত্রিবাহী গাড়ির জন্য অবশ্য বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ দিন দেখা যায়, পূর্ত ভবনের পাশে ইডেন ক্যানালের পুরনো সেতু দিয়ে অনেক ছোট যাত্রিবাহীগাড়ি, মোটরবাইক যাতায়াত করছে। ভাঙাচোরা রাস্তাও সংস্কার করা হয়েছে। পুলিশ ও পূর্ত দফতর থেকে যাত্রীদের সুবিধার্থে বারবার মাইকে কী ভাবে বর্ধমান শহরে যাওয়া যাবে, কী ভাবে বাঁকুড়া-আরামবাগের বাস ধরা যাবে তা প্রচার করা হচ্ছে। এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ) আমিনুল ইসলাম বলেন, “বুলচান্দপুর, বাঁকুড়া মোড়, সগড়াই, শ্যামসুন্দর ও পলেমপুরে পুলিশের ক্যাম্প করা হয়েছে। মালবাহী গাড়িগুলিকে নির্দিষ্ট রাস্তায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ সংস্কার চলাকালীন ২৪ ঘণ্টা পুলিশ থাকবে বলেও ঠিক হয়েছে। পুলিশ সুপারও জানান, পলেমপুরের অস্থায়ী স্ট্যান্ডে বাসগুলি দাঁড়ানোর ফলে গ্রামীণ হাট বসার ক্ষেত্রে অসুবিধা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দু’দিকেই যথেষ্ট পুলিশের ব্যবস্থা রয়েছে।
পূর্ত দফতরের বর্ধমান ডিভিশনের (১) এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার ভজন সরকার জানান, সেতুর উপরিভাগের কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। নীচের দিকে ‘বিয়ারিং’ ও ‘গার্ডার’ সংস্কার করতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ হবে, তাঁদের আশা। সংস্কারের জন্য ৫৫ লক্ষ টাকা খরচ হবে।