গোলমালের মাঝে বিজেপি নেতা কৃষ্ণ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র
অরাজনৈতিক অনুষ্ঠানে এসে ‘হেনস্থা’র শিকার হলেন বিজেপির জেলা সভাপতি (কাটোয়া) কৃষ্ণ ঘোষ। অভিযোগ, মঙ্গলবার পূর্বস্থলী স্টেশন সংলগ্ন রেলের মাঠে দলেরই একাংশ কর্মী, সমর্থকের কাছেই হেনস্থা হন তিনি। অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন রাজ্য বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গী, মুকুল রায়, রাজীব ভৌমিক প্রমুখ। কৃষ্ণবাবু যদিও হেনস্থার কথা মানেননি।
তাঁর দাবি, ‘‘এ দিন একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়। অনুষ্ঠানটি দলের ছিল না। তবে অনেকেই মনে করেন মুকুলজি, কৈলাসজি এসেছেন কেন তাদের জানানো হয়নি। এটাই ওঁরা আমার কাছে জানতে চান। ওঁরা আমার কাছে আসতেই পারেন, আব্দার করতেও পারেন। কারণ আমি অভিভাবক।’’
এ দিন ‘বর্ধমান শিল্পী সংসদ’ নামে একটি সংস্থা ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। শিল্পীদের তরফে সরকারি ভাতা-সহ ন’দফা দাবি জানানো হয়। বিকেলে অনুষ্ঠান সেরে কৈলাসবাবু এবং মুকুলবাবু গাড়িতে ওঠার পরেই শুরু হয় গণ্ডগোল। বিজেপিরই একাংশের অভিযোগ, কৃষ্ণবাবুকে মঞ্চ থেকে বার হওয়ার রাস্তায় ঘিরে ধরেন একদল কর্মী। প্রথমে গালিগালাজ, পরে তাঁকে লক্ষ করে তেড়ে যান কয়েকজন। কিল, ঘুষিও চালানো হয় বলে অভিযোগ। দ্রুত দলের অন্য নেতা-কর্মীরা এসে পরিস্থিতি সামাল দেন। কিছুটা দূরে রাখা বাঁশের ব্যারিকেড এনে ঘটনাস্থল থেকে জেলা সভাপতিকে অন্যত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনায় একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। তাতে দেখা গিয়েছে, লাল রঙের জামা পরা এক যুবক পিছন থেকে কৃষ্ণবাবুকে মারার চেষ্টা করছে। যদিও ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করা আনন্দবাজারের পক্ষে সম্ভব হয়নি। নিত্যানন্দ মিস্ত্রী নামে এক বিজেপি কর্মীর ক্ষোভ, ‘‘আমরা দুর্দিনের কর্মী। অথচ আমাদেরই কমিটি থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তৃণমূলের লোকজনেদের দলে ঢুকিয়ে দলটা শেষ করে দিচ্ছে।’’ সম্প্রতি পূর্বস্থলী থেকে জেলা পরিষদের সদস্য বিপুল দাস-সহ বেশ কিছু তৃণমূল নেতা কর্মী যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে।
দলের জেলা সহ সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গণ্ডগোল তেমন হয়নি। তবে এটা অস্বীকার করা যাবে না তৃণমূল থেকে কিছু লোকজন আসায় দলের কর্মীদের মধ্যে কিছুটা ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘নতুন আসা লোকজন যাতে এই এলাকায় দায়িত্ব না পান, সেই জন্য জেলা সভাপতির কাছে আবেদন জানাতে এসেছিলেন কয়েকজন। এ দিন আলোচনার পরিবেশ না থাকায় পরে বিষয়টি নিয়ে বসা হবে।’’
পূর্বস্থলী উত্তর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রাক্তন বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যােয়র অবশ্য কটাক্ষ, ‘‘বিজেপি দুর্বল না হলে প্রকাশ্যে এ রকম গুঁতোগুঁতি হয় না। ওঁরা নিজেদের মধ্যেই যদি মারামারি করে তাহলে লড়াই করবে কখন!’’ তাঁর দাবি, ‘‘কেন্দ্র এবং রাজ্য নেতাদের উপস্থিতিতেই মারামারির ঘটনা ঘটে।’’ যদিও রাজীববাবু বলেন, ‘‘জেলা সভাপতিকে হেনস্থা করার ঘটনা ঘটেনি। ছোটখাটো বিষয়ে কথা কাটাকটি হয়। খোঁজ নিয়ে জেনেছি তা মিটেও গিয়েছে।’’