দলীয় নেতাকে ঘিরে ক্ষোভ বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের। নিজস্ব চিত্র
‘লকডাউন’-এর বিধি ভেঙে দলের নেতা এসেছেন তৃণমূল সমর্থক বলে এলাকায় পরিচিত এক জনের বাড়িতে। এই অভিযোগে দলের নেতা সন্তোষ সিংহকে ঘণ্টাখানেক আটকে রাখলেন বিজেপির স্থানীয় কর্মীদের একাংশ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জামুড়িয়ার পরাশিয়া কুলডাঙার ঘটনা। তবে এই ঘটনার জন্য সন্তোষবাবু সরাসরি ‘দলীয় কোন্দল’কেই দায়ী করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজেপির স্থানীয় কর্মীদের একাংশ জানান, ওই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ সন্তোষবাবু তৃণমূল সমর্থক যুগল যাদবের বাড়ি এসেছিলেন। এই খবর চাউর হতেই স্থানীয় বিজেপি কর্মীদের একাংশ যুগলবাবুর বাড়ির সামনে জড়ো হন। সন্তোষবাবুর বিরুদ্ধে ‘লকডাউন’ ভেঙে জামুড়িয়া থেকে পরাশিয়া আসার অভিযোগে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। সন্তোষবাবুকে কয়েকজন কর্মী জিজ্ঞাসা করেন, “জরুরি কাজ ছাড়া বাড়ির বাইরে বেরনো নিষিদ্ধ। তবুও মাস্ক না পরে অকারণে কেন এক তৃণমূল সমর্থকের বাড়িতে এসেছেন?”
যুগলবাবু পরিস্থিতির সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলে বিজেপি কর্মীরা তাঁকেও আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখানো হবে বলে জানান। ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় যান বিজেপির মণ্ডল সভাপতি (জামুড়িয়া গ্রামীণ ২) গৌতম মণ্ডল। তিনি সন্তোষবাবুকে উদ্ধার করে বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করেন বলে দলীয় সূত্রে জানা যায়। তবে গৌতমবাবুও বলেন, “লোকসভা ভোটের আগে আমাদের এক কর্মীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছিল যুগলবাবুর বিরুদ্ধে। তাঁর মতো এক জনের সঙ্গে আমাদের নেতা দেখা করলে ভুল বার্তা যাবে। তিনি যেন আর কোনও দিন যুগলবাবুর মতো কারও বাড়িতে না যান, সন্তোষবাবুকে তা জানানো হয়েছে।”
কিন্তু এই ঘটনা কেন, তা নিয়ে দলের অন্দরেই চাপান-উতোর শুরু হয়েছে বলে বিজেপির স্থানীয় কর্মীদের একাংশ জানান। বিজেপির প্রাক্তন জেলা সম্পাদকদের অন্যতম সন্তোষবাবুর অভিযোগ, “জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের অনুগামীরা আমাদের মতো নেতা, কর্মীদের ভাবমূর্তি খারাপ করার চেষ্টা করছেন। যুগলবাবুর ছেলের সঙ্গে আমার এক আত্মীয়ের মেয়ের বিয়ে দেওয়ার জন্য কথা বলতে এসেছিলাম। অন্য দলের লোক হলে তাঁর বাড়ি যাওয়া যাবে না, এমন নির্দেশিকা নেই।” বিয়ের সম্বন্ধের কথা জানিয়েছেন যুগলবাবুও।
তবে কোন্দলের কথা অস্বীকার করেছেন বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণবাবু। তাঁর প্রতিক্রিয়া, “এর আগে দলের শৃঙ্খলা ভাঙার কারণে সন্তোষবাবুকে দলের জেলা সম্পাদকের পদ থেকে অপসারণ করা হয়। মঙ্গলবারের ঘটনায় উনি দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন। বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছি।”
এ দিকে, স্থানীয় বাসিন্দা তথা তৃণমূল নেতা উদীপ সিংহ বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধেও ‘লকডাউন’-এর বিধি ভাঙার অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিজেপি কর্মীরা।