Ram Mandir Inauguration

অক্ষত চাল বিলির ফাঁকে জনসংযোগও, ভোটে প্রভাবের আশা গেরুয়া শিবিরে

রামমন্দির উদ্বোধনের দিন বাড়িতে প্রদীপ জ্বেলে উদ্‌যাপনের আর্জি জানিয়ে সোমবার পর্যন্ত এই চাল ও রামমন্দিরের ছবি দেওয়ার কর্মসূচি নিয়েছিল আরএসএস, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতো সংগঠনের কর্মীরা।

Advertisement

প্রণব দেবনাথ , কেদারনাথ ভট্টাচার্য

কাটোয়া ও কালনা শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:২৭
Share:

সম্প্রতি কাটোয়ার এক বাড়িতে। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়।

সঙ্গে দলের পতাকা নেই। তবে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে অযোধ্যায় নবনির্মিত রামমন্দিরের ছবি ও অক্ষত চাল বিলির কর্মসূচিতে অধিকাংশ জায়গাতেই সামনের দিকে দেখা গিয়েছে স্থানীয় বিজেপি কর্মীদের। সেই ছবি ও চাল নেওয়ার ক্ষেত্রে যা সাড়া মিলেছে, আসন্ন লোকসভা ভোটেও তার প্রভাব পড়বে, আশা করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তবে কিছু কিছু বাড়িতে গিয়ে অন্য রকম প্রশ্নের মুখেও পড়তে হয়েছে কর্মীদের। ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করতেই এই কর্মসূচি বলে অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল।

Advertisement

রামমন্দির উদ্বোধনের দিন বাড়িতে প্রদীপ জ্বেলে উদ্‌যাপনের আর্জি জানিয়ে সোমবার পর্যন্ত এই চাল ও রামমন্দিরের ছবি দেওয়ার কর্মসূচি নিয়েছিল আরএসএস, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতো সংগঠনের কর্মীরা। অরাজনৈতিক এই কর্মসূচিতে যোগ দেন বিজেপি কর্মীরাও। কোথাও তিন জন, আবার কোথাও চার জনের দলে ভাগ হয়ে বাড়ি-বাড়ি গিয়েছেন তাঁরা। কর্মসূচিতে জড়িত থাকা বিজেপি নেতা-কর্মীদের দাবি, বেশির ভাগ বাড়ি থেকেই ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গিয়েছে। অনেকেই দরজা খুলে চাল ও ছবি সংগ্রহ করেছেন। প্রদীপ জ্বালানোর আবেদন আগ্রহ নিয়ে শুনেছেন।

এই কর্মসূচি থেকে অবশ্য সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকা কার্যত বাদ রাখা হয়েছিল। আবার বিজেপি নেতা-কর্মীদের একাংশের দাবি, কিছু জায়গায় সিপিএম নেতারা বাড়ির দরজা খুলতে দেরি করেছেন। পরে বেরিয়ে চাল-ছবি নিয়ে দ্রুত দরজা বন্ধ করে দিয়েছেন। আবার কেউ কেউ টিপ্পনী করতেও ছাড়েননি। কাটোয়ার খাজুরডিহিতে এক তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য আবার চাল ও ছবি নিতে অস্বীকার করে বাড়িতে ঢুকে যান।

Advertisement

সম্প্রতি বাড়িতে চাল ও ছবি পাওয়ার পরে কাটোয়ার বৃদ্ধা সন্ধ্যা দাস বলেন, “অনেক দিন শুনছি, অযোধ্যায় রামমন্দির হবে। ঘরে বসে অযোধ্যা থেকে আসা অক্ষত চাল ও মন্দিরের ছবি পেয়ে আনন্দ হচ্ছে।’’ মঙ্গলকোটের বাসিন্দা জয়ন্ত সাহার বক্তব্য, ‘‘রাম কোনও দলের নয়। অনেকেই তাই ওই দিনটির অপেক্ষায় রয়েছেন।’’ তবে ২২ জানুয়ারি বাড়িতে প্রদীপ জ্বালিয়ে কোনও পক্ষে রোষে পড়তে হবে কি না, সে নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ। দাঁইহাট শহরের এক বাসিন্দা বলেন, “আমি ব্যবসা করে সংসার চালাই। কোনও রাজনৈতিক তকমা যাতে লেগে না যায়, সেই আশঙ্কা তো রয়েছেই।’’

‘শ্রীরাম জন্মভূমি ন্যাস’-এর কাটোয়া শাখার কর্তা অভিজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, “রামমন্দির দর্শনের আবেদনে দারুণ সাড়া পেয়েছি। রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে সবাই যোগ দিন, এটাই আবেদন।’’ তবে এক বিজেপি নেতার দাবি, ‘‘বিষয়টিতে সরাসরি রাজনীতির যোগ নেই ঠিকই। তবে এই কর্মসূচিতে দলের নেতা-কর্মীরা বাড়ি-বাড়ি যেতে পেরেছেন। তাতে ভোটারদের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক তৈরি হয়েছে।’’ বিজেপির জেলা (কাটোয়া সাংগঠনিক) সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এটি রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়। দলের সঙ্গে এর যোগ নেই। তবে অনেকের সঙ্গে আমি নিজেও সেবক হিসেবে বেশ কিছু বাড়িতে গিয়েছি। কিছু বাড়ি ছাড়া বেশির ভাগ জায়গায় ভাল সাড়া পাওয়া গিয়েছে।’’ তাঁর দাবি, এলাকার ৭০ শতাংশ বাড়িতে চাল ও ছবি দেওয়া হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে বিজেপি রাজনীতি করছে বলে অভিযোগ তৃণমূলের। দলের অন্যতম রাজ্য মুখপাত্র দেবপ্রসাদ বাগের কথায়, ‘‘ধর্ম নিয়ে ওরা রাজনীতি করে। সামনে লোকসভা ভোট। তাই ওদের লোকজন এখন রামের ছবি নিয়ে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে। আমরা সব ধর্মকেই শ্রদ্ধা করি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement