তরজা বিজেপি-তৃণমূলে
TMC

Bombing: বোমা ফেটে ভাঙল বাড়ি

সপ্তাহ দু’য়েক আগেই ভাতারের বাণেশ্বরপুরে একটি বাড়িতে মজুত করা বোমা ফেটে একটি বাড়ির চাল উড়ে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

কেতুগ্রাম শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২১ ০৬:১৭
Share:

কেতুগ্রামের সুজাপুের এই বাড়িই বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত। নিজস্ব চিত্র।

বোমা ফেটে ভেঙে পড়ল একটি পাকা বাড়ির একাংশ। বৃহস্পতিবার ভোরে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের সুজাপুরের ওই ঘটনা নিয়ে তৃণমূল-বিজেপির চাপান-উতোর চলছে। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে বোমা মজুত ছিল। তৃণমূলের পাল্টা দাবি, যাঁর বাড়িতে বিস্ফোরণ হয়েছে, তাঁর সঙ্গে দলের যোগ নেই। পুলিশ জানায়, ঘটনার পর থেকে বাড়ির লোকজনের হদিস নেই। পড়শিদের একাংশের অবশ্য দাবি, বাড়ির মালিক সাক্ষী ঘোষ-সহ তিন জন বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন। তাঁদের নদিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

Advertisement

সপ্তাহ দু’য়েক আগেই ভাতারের বাণেশ্বরপুরে একটি বাড়িতে মজুত করা বোমা ফেটে একটি বাড়ির চাল উড়ে যায়। ওই বাড়ির এক জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ দিন কেতুগ্রাম ২ ব্লকের মৌগ্রাম পঞ্চায়েতের সুজাপুরেও মজুত করা বোমা ফেটে গিয়েই এমন কাণ্ড বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা। আজ, শুক্রবার গ্রামে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ দলের আসার কথা রয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কেতুগ্রাম ২ ব্লকের মৌগ্রাম পঞ্চায়েতের সুজাপুর গ্রামে স্কুলপাড়ায় পাকা রাস্তার পাশেই সাক্ষী ঘোষের বাড়ি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পড়শিদের একাংশের দাবি, তিনি ও তাঁর ছেলে সুব্রত ঘোষ ওরফে শুভ এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত। বছর ষাটের সাক্ষীবাবু স্ত্রী, ছেলে-পুত্রবধূ, নাতি-নাতনি নিয়ে থাকেন। তাঁর অন্য তিন ছেলে গ্রামেই অন্যত্র থাকেন। ঘটনার পর থেকে তাঁরা সকলেই বেপাত্তা বলে পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান।

Advertisement

ওই পাড়ার বাসিন্দা, বছর সত্তরের সনাতন ঘোষ বলেন, ‘‘তখন ক’টা বাজে খেয়াল নেই, আচমকা তীব্র আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায়। প্রথমে ভেবেছিলাম, ভূমিকম্প হচ্ছে। আতঙ্কে বাইরে বেরিয়ে দেখি, অন্য প্রতিবেশীরাও রাস্তায় নেমেছেন। পরে জানতে পারি, বোমা ফেটে ঘর পড়ে গিয়েছে। আমাদের গ্রামে এমন ঘটনা আগে কখনও হয়নি।’’

এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, বড় পাকা বাড়ির একাংশের দেওয়াল ভেঙে পড়েছে। তিনটি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ছাদের বেশ কয়েকটি জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। একটি ঘরের মেঝেতে বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। চারপাশে বারুদের গন্ধ। কেতুগ্রাম থানার আইসি সুমন চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পুলিশ বাড়িটি ঘিরে রেখেছে। কাউকেই ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। স্থানীয় একটি সূত্রের দাবি, বিস্ফোরণে আহত সাক্ষীবাবু ও তাঁর দুই পরিজনকে কৃষ্ণনগরের কোনও নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যদিও পুলিশের দাবি, এ বিষয়ে তাদের কাছে তথ্য নেই।

গত বিধানসভা ভোটে কেতুগ্রামের বিজেপি প্রার্থী তথা সুজাপুর গ্রামেরই বাসিন্দা অনাদি ঘোষ ওরফে মথুরা দাবি করেন, ‘‘এলাকায় বিজেপি কর্মীদের উপরে হামলা করতেই তৃণমূল কর্মী সাক্ষী ঘোষের বাড়িতে বিপুল পরিমাণ বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করা হয়েছিল। রাতে তা সরাতে গিয়ে কোনও কারণে বিস্ফোরণ হয়। পুলিশ দোষীদের গ্রেফতার করুক।’’ যদিও মৌগ্রাম অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘ওই পরিবারের লোকজনের সঙ্গে আমাদের দলের কোনও যোগ নেই। বিজেপি অপপ্রচার করছে।’’ কেতুগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজেরও দাবি, ‘‘সুজাপুর গ্রামের ওই বুথে বিধানসভা ভোটে আমরা এগিয়ে ছিলাম বলে বিজেপি মিথ্যা অভিযোগ করছে। যে বা যারা বোমা মজুত করেছিল, পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement