পাণ্ডবেশ্বর ব্লকে ডালশস্যের চাষ। নিজস্ব চিত্র
চলতি বছরে পশ্চিম বর্ধমানে আমন ধানের চাষ খুব বেশি হয়নি। ফাঁকা জমিতে ইতিমধ্যেই ডালশস্য চাষের উপর জোর দিয়েছে কৃষি দফতর। জেলার যে সব প্রান্তে আমন ধানের চাষ কম হয়েছে, সে সব এলাকায় চাষিদের বিউলির ডালের বীজ দেওয়া হয়েছে, জানিয়েছে দফতর। কৃষি-কর্তাদের দাবি, এই চাষে খরচ অনেকটাই কম। তা ছাড়া, ডালশস্য চাষে জমির উর্বরতাও বাড়ে।
পাণ্ডবেশ্বরের চাষি মহম্মদ আব্বাস উদ্দিন, মিহির মণ্ডল, রামপদ মাজিরা বলেন, “এ বার জলের অভাবে আমন ধানের চাষ করতে পারিনি। তাই বেশি পরিমাণে ডালশস্য চাষ করে লাভের আাশায় রয়েছি।”
কিন্তু কেন এমনটা? এ বছর জেলায় মাত্র সাড়ে ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। প্রতি বছর সে সংখ্যাটা থাকে, প্রায় ৪০ হাজার হেক্টরের মতো। এ বার বর্ষা শুরু থেকেই কৃপণ থাকায়, এই পরিস্থিতি বলে জানাচ্ছেন চাষিরা। ফলে, জেলার বহু জমিই ফাঁকা পড়েছিল এই মরসুমে। এই পরিস্থিতিতে বিউলি চাষে জোর দেওয়ার কথা জানিয়েছে কৃষি দফতর।
দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বিতরণ করা বীজ জমিতে ছড়ানোও হয়ে গিয়েছে। এ বছর জেলায় পাঁচশো হেক্টর জমিতে বিউলির চাষ করা হচ্ছে। প্রতি বছর এই সংখ্যাটা থাকে, একশো হেক্টরের আশপাশে। এই চাষের জোর দেওয়ার কারণ হিসেবে কৃষি-কর্তারা জানাচ্ছেন— প্রথমত, চাষের খরচ কম। চাষিদের হিসাবে, এক বিঘা জমিতে এই ডালশস্যটি চাষ করতে খরচ হয় প্রায় ১,৫০০ টাকা। দ্বিতীয়ত, উচ্চ-ফলন এবং বাজারদর। এক বিঘা জমিতে বিউলির ফলন হয় আনুমানিক এক কুইন্টাল। এর বাজারদর থাকে, কিলোগ্রাম প্রতি ৭০ থেকে ৮০ টাকা। ফলে, এই ডালশস্য চাষ ও বিক্রি করে চাষিরা লাভবান হতে পারেন। তৃতীয়ত, বিউলি ডালে রোগ-পোকার আক্রমণ বেশ কম। ফলে খুব বেশি কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয় না।
পশ্চিম বর্ধমানের জেলা উপ-কৃষি অধিকর্তা জাহিরুদ্দিন খান বলেন, “বিউলি চাষে চাষিরা লাভবান হবেন। আমাদের দফতরের তরফে সবরকমের সাহায্য করা হচ্ছে।”