—নিজস্ব চিত্র।
গ্যাস লিক করে বড় দুর্ঘটনা পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায়। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিন ঠিকা শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় চার জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ ডিএসপি কারখানার বেসিক অক্সিজেন ফার্নেস (বিওএফ) বিভাগের দু’নম্বর কনভার্টারের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে। ওই কনভার্টার পরিচর্যার কাজ করছিলেন তিন ঠিকা শ্রমিক। এই কনভার্টারে হট মেটাল গ্যাসের সাহায্যে ব্লো করে লিকিউড স্টিল তৈরি করা হয়। কনভার্টার পরিচর্যার কাজে যাওয়া ওই তিন ঠিকা কর্মীর ফিরতে দেরি হওয়ায় বিষয়টি দেখতে সেখানে যান আরও এক ঠিকা কর্মী। তিনিই দেখেন, জ্ঞান হারিয়ে পড়ে রয়েছেন ওই তিন ঠিকা কর্মী। এর পরেই তিনি বাকিদের খবর দেন। এর ঘণ্টা দুয়েক পর তাঁদের উদ্ধার করে ডিএসপি ইস্পাত কারখানার দমকল ও সিআইএসএফ। উদ্ধারের সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন আরও চার জন।
সঙ্গে সঙ্গেই আহতদের ইস্পাত কারখানার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিন ঠিকা শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের নাম— সিন্টু যাদব (২৭), সন্তোষ চৌহান (২৭) ও সজন চৌহান (৪৮)। সিন্টু দুর্গাপুরের কাদা রোডের বাসিন্দা। সন্তোষ আর সজন থাকেন দুর্গাপুর মেন গেট এলাকার বাসিন্দা। বাকিদের বর্তমানে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার জনসংযোগ আধিকারিক আসরফ হুসেন।
কারখানার শ্রমিকদের অভিযোগ, কার্বন মনোক্সাইড গ্যাসের মিশ্রণে তৈরি হয় বিওএফ গ্যাস। এই মারণ কার্বন মনোক্সাইড গ্যাসের কারণেই অসুস্থ হয়ে পড়েন এই ঠিকা কর্মীরা। তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের নেতা সেখ সাহাবুদ্দিনের অভিযোগ, পর পর দুর্ঘটনা ঘটছে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায়। তাও শ্রমিক নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিয়ে উদাসীন কর্তৃপক্ষ। দুর্ঘটনা নিয়ে তদন্ত হলেও তা রূপায়ণ হয় না বলে অভিযোগ শ্রমিক সংগঠনগুলির। তাদের দাবি, ঠিকা শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এমন ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে না ঘটে, তার জন্য সঠিক পদক্ষেপ করারও দাবি জানিয়েছে তারা।