Bardhaman University

হস্টেলে সিসি ক্যামেরা বসবে, টাকা দেবে কে? 

উপাচার্য না থাকায় হস্টেল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনন্দিন পরিচালনার নানা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন সহ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, দুই ডিন, ফিনান্স অফিসারেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২৩ ০৮:৫৫
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

যাদবপুর-কাণ্ডের জেরে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হস্টেলের মূল দরজা ও কিছু সাধারণ জায়গায় সিসি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু প্রশ্ন হল, প্রায় দেড় মাস ধরে উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয়ে সিসি ক্যামেরা বসানোর বিপুল খরচের অনুমতি কে দেবে। ফলে যে দ্রুততায় ইউজিসির পরামর্শ মেনে হস্টেলে সিসি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, সেই দ্রুততায় ক্যামেরা আদৌ বসবে কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

Advertisement

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী উপাচার্য আশিস পাণিগ্রাহী বলেন, ‘‘সিসিটিভি লাগানোর বিপুল পরিমাণ টাকার অনুমোদন কে করবেন, এটা বড় প্রশ্ন। আপাতত সরকারি সংস্থার মাধ্যমে বিস্তারিত রিপোর্ট সাত দিনের মধ্যে দিতে বলা হয়েছে। তার মধ্যে উপাচার্য চলে এলে আর কোনও সমস্যা নেই। না হলে বিশেষ অনুমোদনের ব্যবস্থা করতে হবে। টাকার অসুবিধা হবে না।’’

উপাচার্য না থাকায় হস্টেল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনন্দিন পরিচালনার নানা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন সহ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, দুই ডিন, ফিনান্স অফিসারেরা। স্নাতকস্তরের শেষ সিমেস্টারের খাতা দেখার জন্য বড় অঙ্কের টাকা খরচ হচ্ছে। শিক্ষার স্বার্থে দ্রুততার সঙ্গে খরচ করতে বাধ্য হচ্ছেন বলে লিখিত ভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তাঁরা। উপাচার্য আসার পরে পূনর্মূল্যায়ন করে এগজ়িকিউটিভ কমিটিতে (ইসি) সিদ্ধান্ত পেশ করার কথাও বলা হচ্ছে। বিপুল পরিমাণ প্রশ্নপত্র, অ্যাডমিট কার্ড ছাপতে ‘টান’ পড়ে যাচ্ছে বলেও জানা গিয়েছে। এ ছাড়াও হস্টেলে দৈনিক বেতনে যাঁরা কাজ করেন, তাঁরা এ মাসের বেতন পাবেন কি না, তা নিয়েও ধন্দ রয়েছে। সহ-উপাচার্যের দাবি, ‘‘গত মাসে দায়িত্ব ও ঝুঁকি নিয়ে বেতনের টাকা ছাড়া হয়েছিল। মাসের পর মাস তো আর সেটা করা যাবে না।’’

Advertisement

পূর্ব বর্ধমান, হুগলি ও বীরভূম জেলার ৬৪টি স্নাতক স্তরের কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ রয়েছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায়। সেখানে দেড় মাস উপাচার্য না থাকায় সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতে হচ্ছে, মেনে নিচ্ছেন উচ্চপদস্থ কর্তারা। তাঁদের দাবি, যাদবপুর-কাণ্ডের পরে হস্টেল সম্পর্কিত নানা রকম সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। সেখানে টানাপড়েন হচ্ছে। উপাচার্য থাকলে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে কার্যকর করতে পারতেন। শিক্ষা সংক্রান্ত একাধিক সিদ্ধান্ত, ইসি বৈঠকও আটকে থাকছে। কর্তাদের দাবি, ১ সেপ্টেম্বর থেকে স্নাতকোত্তর স্তরের ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হবে। উপাচার্য না থাকায় ফ্যাকাল্টি কাউন্সিলের বৈঠক এখনও হয়নি। আবার স্নাতকস্তরের চার বছরের পাঠক্রম নিয়ে বৈঠক হলেও সিদ্ধান্তে আসা যাচ্ছে না। সেই কারণেই হস্টেলে ক্যামেরাও বসবে কি না, সেই প্রশ্ন রয়েই যাচ্ছে। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির (বুটা) সম্পাদক ভাস্কর গোস্বামী জানান, সমস্যাগুলি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যকে ই-মেল করেছেন তাঁরা।

জানা গিয়েছে, দরপত্র ডেকে ১১টি হস্টেলে অন্তত ৩৭টি সিসি ক্যামেরা, তারাবাগ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনে তার কন্ট্রোল রুম করতে বেশ কয়েক মাস সময় লাগবে। আপাতত সরকারি সংস্থা বিস্তারিত প্রোজেক্ট রিপোর্ট তৈরি করে বিশ্ববিদ্যালয়কে সাত দিনের মধ্যে জমা দেবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সরকারি সংস্থাকেই কাজের বরাত দেবেন। এক কর্তার দাবি, ‘‘সরকারি সংস্থাকে দিয়ে কাজ করালে দরপত্র ডাকার প্রয়োজন নেই। কিন্তু প্রায় দেড় কিলোমিটার জুড়ে কেবল পাতা, ইন্টারনেট সংযোগ, সিসি ক্যামেরা লাগানো, কন্ট্রোল রুম তৈরি করা নিয়ে ১৫-২০ লক্ষ টাকা খরচ হবে। সেই টাকার অনুমোদন কে দেবে, সেটাই প্রশ্ন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement