—প্রতীকী চিত্র।
মুর্শিদাবাদের ‘ভাগীরথী’, বাঁকুড়ার ‘কংসাবতী’র মতো পূর্ব বর্ধমানও ‘বর্ধমান মিল্ক’ নাম দিয়ে প্যাকেটজাত দুধ বিক্রি করবে বলে ঠিক করেছে জেলা প্রশাসন। সব ঠিক থাকলে, এ মাসের শেষ দিকে ‘বর্ধমান মিল্ক’ বাজারে চলে আসবে। জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা বলেন, ‘‘আপাতত জেলার কয়েকটি দোকান থেকে বর্ধমান মিল্কের প্যাকেট বিক্রি হবে। ধীরে ধীরে দুধের উৎপাদন বাড়ানো হবে। তার সঙ্গে বিক্রিও বাড়বে বলে মনে করছি।’’ এর ফলে দুধ উৎপাদকদের আর পিছনে ফিরে তাকাতে হবে না, দাবি তাঁর।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, দুধ সংগ্রহ করে যাত্রা শুরু করবে বর্ধমান মিল্ক। পুজোর আগেই ভাতারে পাঁচ একর জায়গায় নিজস্ব উৎপাদন কেন্দ্র, উন্নতমানের প্যাকেজিংয়ের কাজ শুরু হয়ে যাবে। সেই লক্ষ্যে কেতুগ্রাম ২ ব্লকে গো-পালকদের নিয়ে একটি ‘ফার্মার্স প্রোডিউসার্স অর্গানাইজেশন’ বা এফপিও তৈরি করা হয়েছে। তাঁরা গরুর খাবার ভাতারের উৎপাদন কেন্দ্রে সরবরাহ করবেন। জেলা প্রশাসনের দাবি, ‘বাংলা ডেয়ারি’ জেলায় সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন দুধের চাহিদা অনুযায়ী জোগান দিতে পারে না। সেই ফাঁকটা ভরাট করবে বর্ধমান মিল্ক।
প্রশাসনের কর্তারা জানান, বাংলা ডেয়ারির দোকান ছাড়াও সরকারি দোকান থেকে এই দুধ বিক্রি করা হবে। হাসপাতালের রোগীদের খাবারে দুধ বাধ্যতামূলক, সেখানেও বিক্রি করা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে দুগ্ধজাতীয় সামগ্রী যেমন, পনির, দই, ঘোলজাতীয় দ্রব্য তৈরি করার দিকেও ঝোঁকা হবে। পুরো প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্বে থাকছে ‘বর্ধমান কো-অপারেটিভ মিল্ক ইউনিয়ন’। তাঁদের দাবি, মুর্শিদাবাদে ভাগীরথী, বাঁকুড়ায় কংসাবতী, মেদিনীপুরের মিমুল নাম দিয়ে বাজারে প্যাকেটজাত দুধ বিক্রি হয়। পূর্ব বর্ধমানে প্রতিদিন কয়েক হাজার লিটার দুধ উৎপাদন হয়। কাটোয়ায় বড় ‘চিলিং প্ল্যান্ট’ রয়েছে। তা ছাড়া ছোট ছোট কয়েকটি জায়গাতেও দুধ ঠান্ডা করার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু পরিকাঠামোগত অসুবিধার জন্য দুধ সংগ্রহ প্রক্রিয়া তেমন এগোয়নি। দুধ পরীক্ষার যন্ত্রও ছিল না। তা কয়েক মাস আগে জেলা পরিষদের মাধ্যমে জেলাশাসক ব্যবস্থা করেন। বর্তমানে ওই ইউনিয়ন প্রতি দিন পাঁচ হাজার লিটার দুধ সংগ্রহ করে। তা তারা বেসরকারি সংস্থাকে বিক্রি করে। সেখানকার ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুভাষ মণ্ডল বলেন, ‘‘পরিকাঠামোর উন্নতি হলে বর্তমানের কয়েক গুণ বেশি দুধ সংগ্রহ সম্ভব হবে। উৎপাদকেরাও সব দিক থেকে লাভবান হবেন। কর্মসংস্থানও হবে।’’