আবাস যোজনা বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ হল গলসিতে। গোটা ব্লকে উপভোক্তাদের সংখ্যা শূন্য়! —নিজস্ব চিত্র।
একটা গোটা আবাস যোজনার তালিকায় কোনও উপভোক্তার নামই নেই! নাম নথিভুক্ত করলেও তালিকায় নথিভুক্তের সংখ্যা শূন্য। আবাস যোজনা বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করল পূর্ব বর্ধমানের গলসি-২ ব্লক। সাধারণ মানুষের ক্ষোভের মুখে অস্বস্তিতে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। বিষয়টি নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেছে বিজেপি-ও।
একটি গোটা আবাস যোজনার তালিকায় কেন কোনও উপভোক্তার নাম নেই, এ নিয়ে আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে যোগাযোগ করা হয় গলসি-২ ব্লকের বিডিও সঞ্জীব সেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘‘২০১৮ সালে আবাস যোজনার তালিকা তৈরির সময় সাতটি পঞ্চায়েতের মোট ১৯,৬৩৬ জন আবেদন করেছিলেন। কেন্দ্রীয় সরকারের পোর্টালেও ওই ১৯,৬৩৬ জন উপভোক্তার নাম তোলা হয়। কিন্তু প্রকাশিত আবাস যোজনার তালিকায় গলসি-২ ব্লকের কোনও উপভোক্তার নাম নেই। পোর্টালে শূন্য দেখাচ্ছে!’’ বিডিওর সংযুক্তি, ‘‘জেলার আউশগ্রাম-১ ব্লকে ১১, পূর্বস্থলী-১ ব্লকে মাত্র ১২ জন উপভোক্তার নাম এই তালিকায় এসেছে। তা ছাড়া, ভাতার এবং বর্ধমান-১ ব্লকের একটা বড় অংশ আবাস যোজনার তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় গ্রাম উন্নয়ন দফতরে একাধিক বার চিঠিচাপাটি করা হয়েছে। কিন্তু কাজ হয়নি।’’
এই একই কথা জানান গলসি-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বাসুদেব চৌধুরীও। তাঁর কথায়, ‘‘পোর্টালে ২০১৮ সালে উপভোক্তাদের তথ্য আপলোড করা হয়। কিন্তু সমস্ত উপভোক্তাদের নাম বাদ গিয়েছে। আমরা চাই, অবিলম্বে উপভোক্তাদের নাম পাঠানো হোক আবাস যোজনার তালিকায়।’’ এ নিয়ে ব্লক তৃণমূলের সহ-সভাপতি শৈলেন হালদার বলেন, ‘‘বার বার ব্লক থেকে চিঠি পাঠানো হলেও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’’
তবে বিরোধীরা শাসকদলকেই কাঠগড়ায় তুলেছে। বিজেপির জেলা সভাপতি অভিজিৎ তা বলেন, ‘‘স্থানীয় প্রশাসনের অপদার্থতার জন্যই এত গুলো মানুষের নাম বাদ গেল। অযোগ্য লোক দিয়ে কাজ করানোর ফল এটা।’’ জেলা যুব কংগ্রেস সভাপতি গৌরব সমাদ্দারের টিপ্পনী, ‘‘আবাস যোজনার বাড়ি মানেই উপভোক্তাকে তৃণমূলী হতে হবে। না হলে তাঁর নাম তালিকায় থাকবে না।’’
এ নিয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি দেবু টুডুর অবশ্য ব্যাখ্যা ভিন্ন। তাঁর দাবি, ‘‘পোর্টালে নাম তোলা হলেও প্রযুক্তিগত কারণে গোটা জেলার ৪৪ হাজার উপভোক্তার নাম বাদ গিয়েছে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বার বার আবেদন করেও কিছু ফল হয়নি। এ জন্য কেন্দ্রীয় সরকার দায়ী।’’