চালকের ক্রমাগত ‘অশালীন’ ধাক্কা, প্রতিবাদ করায় তরুণীকে ‘ধাক্কা’ অটো থেকে!

বেনাচিতির নেতাজিনগর কলোনির বাসিন্দা ওই তরুণী একটি কলেজের স্নাতক স্তরের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে ওই তরুণী জানান, সিটি সেন্টারে তাঁর কাজ ছিল। মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ ট্রাঙ্ক রোড থেকে ৫৪ ফুট রুটের মিনিবাস ধরবেন বলে অপেক্ষা করছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:৫২
Share:

—প্রতীকী ছবি।

অটোচালক ক্রমাগত ‘অশালীন’ ভাবে ধাক্কা মারছিলেন। এই আচরণের প্রতিবাদ করায় এক তরুণীকে অটো থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল দুর্গাপুরে। বুধবার পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।

Advertisement

বেনাচিতির নেতাজিনগর কলোনির বাসিন্দা ওই তরুণী একটি কলেজের স্নাতক স্তরের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে ওই তরুণী জানান, সিটি সেন্টারে তাঁর কাজ ছিল। মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ ট্রাঙ্ক রোড থেকে ৫৪ ফুট রুটের মিনিবাস ধরবেন বলে অপেক্ষা করছিলেন। বেশ কিছুক্ষণ পরেও মিনিবাস না পেয়ে ১০টা ২০ মিনিট নাগাদ তিনি প্রান্তিকা-সিটি সেন্টার রুটের একটি অটোয় চড়েন। পিছনের আসনে তিন জন যাত্রী থাকায় তিনি চালকের পাশের আসনে বসেন। আরও এক যুবক সামনের আসনে বসেন।

তরুণীর অভিযোগ, অটো চালানোর বাহানায় অটোচালক অশালীন ভাবে তাঁকে ধাক্কা মারছিলেন। প্রথমে তিনি ভেবেছিলেন, অটোচালকের অজান্তে বিষয়টি ঘটেছে। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যে ফের একই ঘটনা ঘটায় তিনি সতর্ক করেন অটোচালককে। তরুণীর অভিযোগ, ‘‘চালককে সতর্ক করার পরেও তিনি একই ঘটনা ঘটান। আমি প্রতিবাদ করলে বচসা শুরু হয়। আমি তাঁকে অটো থামিয়ে আমাকে নামাতে বলি। তাতে উনি রাজি হননি।’’ অভিযোগ, এর পরে সিটি সেন্টারের পুরসভা মোড়ে সিগন্যালে চালক ধাক্কা মেরে অটো থেকে ফেলে দেন ওই তরুণীকে। তার পরেই চম্পট দেন।

Advertisement

এর ফলে ওই তরুণী মাথায়, কাঁধে, পায়ে চোট পেয়েছেন। কর্তব্যরত কয়েক জন পুলিশকর্মী তাঁকে সাহায্য করেন। কিন্তু অটোর নম্বর তিনি মনে করতে পারেননি। তরুণী বলেন, ‘‘অটোর নম্বর বলতে পারব না। তবে চালককে দেখলেই চিনতে পারব।’’ অটোয় তাঁর ব্যাগটিও রয়ে গিয়েছে বলে জানান তিনি। ব্যাগে আধার কার্ড, প্যান কার্ড, দু’টি এটিএম কার্ড, নগদ টাকা রয়েছে বলে পুলিশকে জানিয়েছেন ওই তরুণী। তরুণীর আরও অভিযোগ, অটোর সহযাত্রীরাও কেউ অটোচালকের আচরণের প্রতিবাদ করেননি।

অটোয় চড়ে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার অভিযোগ এর আগেও দুর্গাপুরে ঘটেছে। ২০১৬-র ফেব্রুয়ারিতে সিটি সেন্টারের নন-কোম্পানি এলাকার মৌলানা আজাদ রোডের এক তরুণী তাঁর শাশুড়িকে নিয়ে টোটোয় উঠলে এক জন অটোচালক অটোয় চড়ার জন্য জোরাজুরি করে। তা না শোনায় ওই অটোচালক টোটো-র পিছু নিয়ে তাঁদের বাড়ি পর্যন্ত ধাওয়া করে। এমনকি আরও কয়েক জন অটোচালককে সঙ্গে নিয়ে গিয়ে তাঁদের ও টোটোচালককে গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগ।

মঙ্গলবারের এই ঘটনার কথা চাউর হতেই সরব হয়েছেন নাগরিকেরা। দুর্গাপুর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মধুমিতা জাজোদিয়া বলেন, ‘‘অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। দোষীর কড়া শাস্তি চাই। এমন হলে নিরাপত্তা কোথায়? সহযাত্রীরাও কেউ এগিয়ে আসেননি জেনে আরও দুশ্চিন্তা হচ্ছে।’’ আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি (পূর্ব) আরিজ বিলাল বলেন, ‘‘অভিযোগ হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।’’

আইএনটিটিইউসি প্রভাবিত দুর্গাপুর সিএনজি অটোরিকশা অপারেটর্স ইউনিয়নের সম্পাদক প্রদীপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘যাত্রীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের প্রধান লক্ষ্য। পুলিশের কাছে ঘটনার খবর পেয়েছি। অভিযুক্ত অটো চালককে শনাক্ত করতে সহযোগিতা করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement