শোকার্ত পরিজনেরা। নিজস্ব চিত্র
সবার বিপদে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতেন। প্রিয় বিষয় ছিল অঙ্ক। অবসরে স্কুল পড়ুয়াদের অঙ্ক শেখাতেন। দুর্গাপুরের ডিএসপি টাউনশিপের বি-জ়োনের বঙ্কিমচন্দ্র অ্যাভিনিউয়ের ২বি/৫০ নম্বর কোয়ার্টারের সামনে ডিএসপি-তে দুর্ঘটনায় মৃত স্থায়ী কর্মী আশুতোষ ঘোষাল (৫৫) ওরফে সীমন্তকে (ডাকনাম) নিয়ে এ ভাবেই স্মৃতিচারণ করছিলেন পড়শিরা।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, একতলার কোয়ার্টারে স্ত্রী সোমাকে নিয়ে থাকতেন আশুতোষ। একমাত্র ছেলে সৌম্যদীপ মহারাষ্ট্রে একটি রং উৎপাদক সংস্থার কর্মী। সেখানেই থাকেন। ছেলের বিয়ের কথাবার্তা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন আশুতোষ। ছোট্ট কোয়ার্টারে থাকার জায়গার সমস্যা। তাই পিছন দিকে একটি নতুন ঘরের নির্মাণ-কাজও শুরু করেছিলেন আশুতোষ।
স্ত্রী সোমা গৃহবধূ। শুক্রবার স্বামীর অপমৃত্যুর খবর শোনার পরে তিনি আর কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে ছিলেন না। পাশেই ছিলেন, তাঁর মা অঞ্জনা। বলেন, “আমার ছেলের সমান ছিল আশুতোষ। সবার খেয়াল রাখতে। এ ভাবে ও চলে গেল। ডিএসপি-তে বার বার দুর্ঘটনা ঘটছে।” পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সৌম্যদীপকে খবর দেওয়া হয়েছে। তিনি ফিরছেন।
দুঃসংবাদ আসার পরে থেকেই কোয়ার্টারের সামনে ভিড় জমিয়েছেন পড়শিরা। তাঁদেরই এক জন লেখা ঘোষাল বলেন, “আশুতোষ অত্যন্ত সহৃদয় মানুষ ছিলেন। তাঁর মৃত্যু ভাবতেই পারছি না।” স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আশুতোষের গণিতে স্নাতকোত্তর ছিলেন। অবসর সময়ে মূলত আইসিএসই বোর্ডের পড়ুয়াদের অঙ্ক শেখাতেন। পড়শি সীমা দাসের ছেলে নবম শ্রেণির ছাত্র প্রীতেশ অঙ্ক শিখত আশুতোষের কাছে। সীমা বলেন, “কাজ থেকে ফিরে ছেলেকে অঙ্ক শেখাতেন উনি। উনি নেই ভাবতেই পারছি না। অঙ্কটা আশুতোষবাবুর নেশার মতো ছিল।”
ডিএসপি-র মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক বেদবন্ধু রায়ও বলেন, “খবরটা শোনার পরে থেকে আমার মন ভারাক্রান্ত। আমার ছেলেকেও উনি দু’বছর অঙ্ক শিখিয়েছিলেন।”