আসানসোল বাজারে জট পাকিয়ে তার। নিজস্ব চিত্র
বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হকারের মৃত্যুর পরে কেটে গিয়েছে দু’দিন। তার পরেও বিভিন্ন জায়গায় ঝুলে থাকা তার সরাতে আসেননি রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার আসানসোল শাখার কর্মীরা, অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দা থেকে ব্যবসায়ীদের।
মঙ্গলবার আসানসোলের হাটন রোড থেকে রাহা লেন, বস্তিন বাজার, ঘাঁটিগলি, গাঁজাগলি-সহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেল প্রত্যেকটি বিদ্যুতের খুঁটিতেই মাকড়সার জালের মতো খোলা বিদ্যুতের তার ঝুলছে। কোথাও লেগে রয়েছে জেনারেটরের তারও। বহু বিদ্যুতের খুঁটি হেলে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও দোকান মালিকদের দাবি, বিদ্যুৎ দফতরের তরফে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকেরা অবশ্য দাবি করেন, বেআইনি ভাবে সংযোগ নেওয়ার জন্যই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রবিবার রাত ৯টা নাগাদ বৃষ্টি শুরু হতে মহম্মদ আফরোজ (৪০) নামে এক ব্যবসায়ী দোকানের জিনিসপত্র বাঁচাতে প্লাস্টিক চাপা দিচ্ছিলেন। তখনই পাশের খোলা তারের স্পর্শে এসে তিনি আহত হন। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। বিদ্যুৎ দফতরের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে ও মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের দাবিতে জিটি রোড অবরোধ করেন ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, বাজার জুড়ে খোলা অবস্থায় ঝুলে থাকা বিদ্যুতের তার ঠিক করার জন্য বিদ্যুৎ দফতরে বহু বার আবেদন জানানো হয়েছে। কিন্তু ফল হয়নি।
বাসিন্দাদের আরও দাবি, তাঁরা মনে করেছিলেন, সোমবার থেকে তৎপর হবে বিদ্যুৎ দফতর। কিন্তু মঙ্গলবার পর্যন্ত এলাকায় দফতরের কাউকে দেখা যায়নি। স্থানীয় দোকান মালিক বিনোদ গুপ্ত, ইমতিয়াজ আলমেরা বলেন, ‘‘আমরা ভয়ে রয়েছি। যে কোনও সময় ফের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’’ স্থানীয় কাউন্সিলর উমা সরাফেরও অভিযোগ, ‘‘ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিদ্যুৎ দফতরে অনেক বার বলেছি। কোনও লাভ হচ্ছে না।’’
যদিও আসানসোল বাজারের এই অবস্থার জন্য ফুটপাতের দোকানদারদের দায়ী করেছেন বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার আধিকারিকেরা। হুকিং করে বিদ্যুৎ নেওয়ার জন্য এই অবস্থা হয়েছে বলে দাবি তাঁদের। আধিকারিকেরা অবশ্য জানান, ২০০৬ সালে আসানসোল বাজারের বিদ্যুতের তার মাটির তলা দিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কাজ শুরু করতে গিয়ে এলাকার লোকজনের বাধার মুখে পড়তে হয় বলে অভিযোগ। সংস্থার আসানসোল শাখার এক আধিকারিক নারায়ণচন্দ্র গড়াই বলেন, ‘‘হুকিং রুখতে ফের অভিযান হবে। তা হলেই সমস্যা মিটবে।’’ কোথাও তার খোলা অবস্থায় থাকলে তা ঠিক করে দেওয়া হবে বলেও আশ্বাস তাঁর।