n আসানসোল জেলা হাসপাতাল। নিজস্ব চিত্র
‘টান’ পড়েছে তহবিলে। এই অবস্থায় ‘থমকে’ গিয়ে একাধিক প্রকল্প রূপায়ণের কাজও। সমস্যাটি আসানসোল জেলা হাসপাতালের। আগামী অর্থবর্ষে পর্যাপ্ত অনুদান যদি না আসে, তবে বকেয়া প্রকল্পগুলি রূপায়ণের পাশাপাশি, চিকিৎসা পরিষেবাও ব্যাহত হতে পারে বলে দাবি। যদিও পরিস্থিতি খুব দ্রুত স্বাভাবিক হবে বলেই মনে করছেন জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত দু’বছর করোনা অতিমারির প্রভাবে আসানসোল জেলা হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণে অনুদান এসে পৌঁছয়নি। ফলে, তাঁরা অর্থ-সঙ্কটে পড়েছেন বলে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, হাসপাতালের অন্যতম ও উল্লেখযোগ্য পরিষেবা হল ‘জননী সুরক্ষা’ যোজনা। এই প্রকল্পের অধীনে প্রসূতি ও তাঁর শিশুর যাবতীয় ওষুধপত্র ও নানাবিধ পরিষেবা দেওয়া হয়। এ জন্য ফি বছর কোটি টাকার মতো খরচ হয়। কিন্তু ২০২১-২২ অর্থবর্ষে এই যোজনায় কোনও টাকা পাওয়া যায়নি বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। তবুও পরিষেবা অব্যাহত রেখেছেন বলে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। হাসপাতাল সুপার নিখিলচন্দ্র দাস বলেন,“সাধারণত বিপিএল তালিকাভুক্তরাই এই সুবিধা বেশি করে ভোগ করেন। ফলে, তাঁরা পরিষেবা না পেলে খুবই সমস্যায় পড়বেন। তাঁদের কথা ভেবেই স্থানীয় ভাবে পরিষেবার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, রোগীদের আনা-নেওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যান্স, চিকিৎসকদের ‘স্পেশ্যাল কল’-সহ নানা বিধ আপৎকালীন পরিষেবার জন্য গাড়ি ও হাসপাতালের জেনারেটরের জ্বালানি তেল বাবদ প্রতি বছর প্রায় আট লক্ষ টাকা খরচ হয়। কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণে তহবিল ‘না মেলায়’ তেলের খরচ মেটাতেও সমস্যা হচ্ছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। তাঁদের আশঙ্কা, তহবিল না এলে যানবাহন ও জেনারেটরের ব্যবহার বন্ধ হয়ে যাবে। পাশাপাশি, আসানসোল জেলা হাসপাতালের প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা বিদ্যুতের বিলও বাকি রয়েছে। কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, পর্ষদ যদি বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়, তবে সমস্যা আরও বাড়বে। যদিও রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার পশ্চিম বর্ধমান জেলার রিজিওনাল ম্যানেজার দয়াময় শ্যাম বলেন, “হাসপাতালে বিদ্যুৎ সরবরাহ ছিন্ন করার কোনও সম্ভাবনা নেই। তবে রাজ্য সরকারের তরফে কেন্দ্রীয় ভাবে বকেয়া বিদ্যুতের বিল মেটানো হচ্ছে বলে শুনেছি।”
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এখানে দু’টি অক্সিজেন প্ল্যান্ট তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে। হাসপাতাল চত্বরের ‘দখল’ ও ‘অবৈধ’ পার্কিং উচ্ছেদ করার জন্য একটি পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের সৌন্দর্যায়ন করার পরিকল্পনাও রয়েছে। এই প্রকল্পের নীল নকশা তৈরি করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, কিন্তু অর্থের অভাবে কাজে হাত পড়ছে না।
এই ‘অর্থ-সঙ্কট’ প্রসঙ্গে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) শেখ মহম্মদ ইউনুস বলেন, “পুরো বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা হবে।”
তিনি জানিয়েছেন, গত দু’বছর করোনা-পরিস্থিতির জন্য এমন অবস্থা হয়েছে। তবে আগামী দিনে সমস্যা থাকবে না বলে মনে করছেন তিনি।