asansol bypoll

Asansol By Election 2022: নিজেরই পুরনো দল বিজেপি-কে কী ভাবে এমন ‘খামোশ’ করিয়ে দিলেন ‘বিহারিবাবু’

কেন এখানে এত দিন জিততে পারেনি তৃণমূল? শনিবারের বারবেলায় তৃণমূলের হয়ে আসানসোলে কার্যত ইতিহাস গড়ে প্রশ্ন করলেন শত্রুঘ্ন সিন্‌হা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২২ ১৩:৪৯
Share:

আসানসোলের জয় মমতাকে উৎসর্গ করলেন শত্রুঘ্ন। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

সিনে-দুনিয়া ছেড়ে তাঁর রাজনীতির আঙিনায় পদার্পণ অনেক দিন হল। কিন্তু সভা মঞ্চে শত্রুঘ্ন সিন্‌হা এসে দাঁড়ালে ঘুরে ফিরে আসে ‘খামোশ’ সংলাপ। সেই ঢঙেই আসানসোলে বিজেপি-কে ‘খামোশ’ করিয়ে দিলেন বলিউডের এক সময়ের ‘অ্যাংরি ইয়ংম্যান’। উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী হয়ে বলেছিলেন ‘ঐতিহাসিক জয়’ এনে দেবেন। শনিবারের বারবেলায় তৃণমূলের হয়ে কার্যত ইতিহাসই গড়লেন ৭৩ বছরের ‘বিহারিবাবু’। বিজেপিকে ‘খামোশ’ (চুপ) করিয়ে তাদের দু’বারের জেতা আসনে ২ লক্ষ ১১ হাজার ভোটে এগিয়ে অটলবিহারী বাজপেয়ী জমানার এই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। জয়ের আনুষ্ঠানিকত ঘোষণা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।

Advertisement

বিজেপি ছেড়ে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিহার থেকে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছিলেন শত্রুঘ্ন। কিন্তু বিজেপি-র প্রার্থী রবিশঙ্কর প্রসাদের কাছে হেরে যান। রাজনীতির তৃতীয় ইনিংস শুরু করলেন তৃণমূল দিয়ে। আর প্রথমেই ছক্কা। শনিবার ফল ঘোষণার প্রথম দিকে কিছুটা লড়াই দিয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল। কিন্তু বেলা যত বাড়ে, ততই প্রতিদ্বন্দ্বীকে পিছনে ফেলে তরতর গতিতে এগিয়েছেন শত্রুঘ্ন। ৩৭ হাজার থেকে ৬৮ হাজার হয়ে এক লাখ তার পর ১ লাখ ৪০ হাজার... ভোটের ফারাক বাড়তে থাকে। শত্রুঘ্ন ভাঙছেন বাবুলের রেকর্ডও।

গত বিধানসভা ভোটে বিজেপির বিরুদ্ধে তৃণমূলের ‘বহিরাগত’ তত্ত্বকে আসানসোলে ব্যুমেরাং করতে চেয়েছিল গেরুয়া শিবির। যদিও প্রচারে নেমে ‘শটগান’ শত্রুঘ্নের জবাব ছিল তিনি বিহারের মানুষ বটে, কিন্তু বাংলার সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক। তাঁর কথায়, ‘‘জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত ‘অন্তর্জলী যাত্রা’ছবিতেও আমি অভিনয় করেছি। আসানসোল শুধু বাঙালি নয়, বিহার, ঝাড়খণ্ড-সহ অন্যান্য রাজ্য থেকে আসা মানুষের বাসভূমি।’’ রাজনীতিক মহলের মতে, ঠিক ওই অঙ্কেই আসানসোলে বিজেপি-কে ঘায়েল করেছে তৃণমূল। শনিবার ভোটের ফলেও দেখা গেল সত্যিই বিজেপি-র ‘বহিরাগত তত্ত্ব’ ছাপ ফেলেনি আসানসোলে।

Advertisement

শত্রুঘ্নের আসানসোল জয়ের পিছনে আরও কারণ আছে। আসলে রাজ্যজুড়ে তাদের জয়জয়কার হলেও এত দিন আসানসোলে দাঁত ফোটাতে পারেনি তৃণমূল। একদা বামেদের গড় আসানসোলে ২০১৪ সালে প্রথমবার পদ্ম ফোটান বাবুল। ১৯’-এর লোকসভা ভোটেও তৃণমূলের মুনমুন সেনকে রেকর্ড ব্যবধানে হারিয়ে দ্বিতীয় বার মোদীর মন্ত্রিসভায় জায়গা করে নেন তিনি। সেই বাবুল এখন তৃণমূলে। এবং শত্রুঘ্নের আসানসোল জয়ের দিনেই তিনি জিতে ফেলেছেন বালিগঞ্জ বিধানসভা। তাই বাবুলের ছেড়ে যাওয়া আসনে জয় আনতে তৃণমূলকে বিশেষ বেগ পেতে হয়নি। রাজনৈতিক কারবারিদের মতে, বাবুলের পদত্যাগ এবং বিজেপি-র দুর্বল সংগঠনই শত্রুঘ্নের জয় সহজ করে দিয়েছিল। তা ছাড়া আসানসোলে তৃণমূলত্যাগী জিতেন্দ্র তিওয়ারি বিধানসভা ভোটে বিজেপি-কে জয় এনে দিতে পারেননি। গত ফেব্রুয়ারিতে আসানসোল পুরভোটেও তৃণমূল জয় পেয়েছে। তাই আসানসোলে এ বার হাতে আসবে, তা আশা করেছিল তৃণমূল। তবে জয়ের ফারাক এমন হবে সেটা বোধহয় কেউই ভাবেননি।

শত্রুঘ্ন বলেন, ‘‘এই জয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এই জয় আসানসোলবাসীর। মমতার নির্দেশ এবং আসানসোলবাসীর আদেশে কাজ করে যাব।’’ কিন্তু এত দিন কেন আসানসোলে তৃণমূল জেতেনি, তা নিয়ে খোদ প্রশ্ন জয়ী প্রার্থীরই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement