স্তব্ধ: ‘লকডাউন’-এর দিন বুধবার বেনাচিতি বাজারে। ছবি: বিকাশ মশান
টানা সাত দিন ‘লকডাউন’ ঘোষণা করা হোক জামুড়িয়া-সহ গোটা রাজ্যে। এই মর্মে রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহের দফতরে ই-মেলের মাধ্যমে আবেদন জানানো হয়েছে বলে বুধবার জানিয়েছে ‘জামুড়িয়া চেম্বার অব কমার্স’।
কিন্তু কেন এমন আর্জি? বণিক সংগঠনটির সম্পাদক অজয় খেতান বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট দিনে রাজ্যে লকডাউন হচ্ছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, ওই দিনগুলির আগে-পরে একই ভাবে মানুষের ঢল নামছে বাজারে। প্রশাসন চেষ্টা করলেও স্বাস্থ্য-বিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে অনেক ক্ষেত্রেই।’’ এই পরিস্থিতিতে অজয়বাবুর দাবি, ‘‘করোনা-সংক্রমণে রাশ টানতেই আমরা মঙ্গলবার ই-মেল করে টানা সাত দিন লকডাউন ঘোষণার আর্জি জানিয়েছি। দরকারে তা ১৫ দিনও করা যেতে পারে।’’
বণিক সংগঠনটির আরও দাবি, এ ভাবে ‘বিক্ষিপ্ত লকডাউন’ বা শহরের একাংশে ‘লকডাউন’ ঘোষণা করে ‘সুফল’ মিলছে না। রানিগঞ্জের শুধু ৮৮, ৮৯ নম্বর, এই দু’টি ওয়ার্ডে টানা ১২ দিন লকডাউন ঘোষণার পরেও সেখানে সংক্রমণ ‘কমেনি’, এমনই দাবি করছে বণিক সংগঠনটি।
এই পরিস্থিতিতে রানিগঞ্জ পুর-এলাকায় সামগ্রিক ভাবে টানা ‘লকডাউন’-এর দাবি উঠেছে। বিএমওএইচ (আলুগড়িয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র) মনোজ শর্মা বলেন, ‘‘সম্পূর্ণ রানিগঞ্জ পুর-এলাকায় টানা ১৫ দিন লকডাউনের প্রস্তাব দিয়েছিলাম জেলা প্রশাসনের কাছে। সে প্রস্তাব এখনও প্রাসঙ্গিক।’’ ‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’-এর সদস্য দিব্যেন্দু দাসও মনে করেন, ‘‘টানা লকডাউন এবং আরও কঠোর হাতে প্রশাসনিক পদক্ষেপ করা হলে করোনা-পরিস্থিতিতে সুফল মিলতে পারে।’’ কোভিড টেস্টের সংখ্যা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন রানিগঞ্জের সিপিএম বিধায়ক রুনু দত্ত।
এমন সব দাবির নেপথ্যে সংক্রমণ-তথ্যই মূল কারণ বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জামুড়িয়ায় এ পর্যন্ত মোট ৩২ জন করোনা-আক্রান্ত হয়েছেন। সুস্থ হয়েছেন ২৬ জন। পাশাপাশি, বিএমওএইচ মনোজবাবু জানান, এ পর্যন্ত রানিগঞ্জে আক্রান্তের সংখ্যা ১৩৬ জন। সুস্থ হয়েছেন ৬৫ জন।
জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘‘বুধবার রানিগঞ্জের দু’টি ওয়ার্ডে মোট ১২ দিনের টানা লকডাউন শেষ হয়েছে। এর পরে কী হবে, তা নিয়ে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’