বন্ধ ত্রিলোকচন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের প্রাণী সহায়ককেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র
প্রাণীদের স্বাস্থ্য বিষয়ে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য জেলার প্রায় প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকায় একটি করে প্রাণী সহায়ককেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে অধিকাংশ কেন্দ্রে পদ ফাঁকা থাকায় তাঁদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রাণী প্রতিপালকেরা। জেলা প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের তরফে অবশ্য দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় রাজ্য প্রাণী চিকিৎসাকেন্দ্র রয়েছে তিনটি। ব্লক প্রাথমিক চিকিৎসাকেন্দ্রের সংখ্যা আটটি। এ ছাড়াও, দু’টি অতিরিক্ত প্রাণী চিকিৎসাকেন্দ্র রয়েছে জেলায়। তবে প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকার মানুষদের প্রাণীর প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ব্লক প্রাণী চিকিৎসাকেন্দ্র বা অতিরিক্ত প্রাণী চিকিৎসাকেন্দ্রে যেতে সমস্যায় পড়তে হয়। সেই সমস্যার কথা মাথায় রেখে প্রাণীদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় প্রাণী সহায়ককেন্দ্র গড়ে তোলা হয়। এই সহায়ককেন্দ্রের সংখ্যাই বেশি। প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকার প্রাণীদের টিকা, প্রাথমিক চিকিৎসা-সহ নানা কাজ করা হয় এখান থেকে। এগুলি চালানোর জন্য একজন করে সহায়ক প্রয়োজন হয়। তাঁরাই এই সহায়ক কেন্দ্রগুলিতে প্রাণীদের দেখভালের কাজ করে থাকেন।
কিন্তু পদ ফাঁকা থাকায় তাতেও সমস্যা মিটছে না বলে অভিযোগ। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় থাকা মোট সহায়ককেন্দ্রের সংখ্যা ৬৫। কিন্তু সহায়ক রয়েছেন মাত্র ২৫ জন। ফলে, অধিকাংশ কেন্দ্র বন্ধই পড়ে আছে।
কাঁকসা ব্লকের ত্রিলোকচন্দ্রপুর, বনকাটি, গোপালপুর, বিদবিহার ও আমলাজোড়া পঞ্চায়েতে রয়েছে একটি করে প্রাণিবিকাশ সহায়ককেন্দ্র। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এগুলির মধ্যে একমাত্র আমলাজোড়া পঞ্চায়েত এলাকায় থাকা কেন্দ্রটি চালু রয়েছে। বাকিগুলির একটিতেও কোনও সহায়ক নেই। বেশির ভাগ সহায়ককেন্দ্রগুলি বন্ধই পড়ে আছে। নষ্ট হচ্ছে সহায়ককেন্দ্রের ভবন। আর এগুলি বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়ছেন মানুষজন। এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, বর্ষার সময় গরু, মোষ-সহ বিভিন্ন প্রাণী নানা রোগে আক্রান্ত হয়। হঠাৎ করে কোনও প্রাণী রোগে আক্রান্ত হলে তাকে স্থানীয় পশু চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হয়। অনেক সময় সেই সব স্থানীয় চিকিৎসকদের কাছে চিকিৎসার সব রকম উপকরণ থাকে না বলে দাবি। তা ছাড়া, চিকিৎসা করাতে খরচও অনেক পড়ে যায়। কাজেই সহায়ককেন্দ্রগুলি চালু থাকলে, এই সমস্যা অনেকটাই মিটবে।
বিদবিহার এলাকার বাসিন্দা মনোজ মণ্ডল, গৌতম ঘোষরা বলেন, ‘‘এই এলাকা থেকে ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দূরত্ব অনেকটাই বেশি। মলানদিঘি পঞ্চায়েতে অতিরিক্ত ব্লক প্রাণী স্বাস্থ্যকেন্দ্র থাকলেও, সেখানে কোনও চিকিৎসক না থাকায় তাঁদেরকে ব্লক প্রাণী স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই যেতে হয়। কাজেই সহায়ক কেন্দ্রগুলি চালু করা হলে বহু মানুষের উপকার হয়।’’ এ প্রসঙ্গে জেলা প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের এক আধিকারিক জানান, সমস্যা রয়েছে। তা দ্রুত মেটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে প্রাণী প্রতিপালকদের যাতে অসুবিধা না হয়, সে জন্য প্রাণিবন্ধু, প্রাণিমিত্ররা কাজ করছেন।