Jobless Juicewala

ঠেলাগাড়িতে শরবত বেচেন ‘জবলেস জুসওয়ালা’

গরম বাড়তেই একটু একটু করে ভিড় বাড়ছে অপুর ঠেলাগাড়ির সামনে। তাঁর কথায়, ‘‘চাকরি হারিয়ে ব্যবসা শুরু করেছি। অনেকেই শরবতের তারিফ করেন। এটাই আমার প্রাপ্তি।’’ 

Advertisement

সুপ্রকাশ চৌধুরী

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২৩ ০৮:২২
Share:

দোকানে ব্যস্ত অপু। নিজস্ব চিত্র

কোভিড-কালে টালমাটাল হয়েছিল কর্মক্ষেত্র। চাকরি যায় বর্ধমান শহরের বড়নীলপুরের বাসিন্দা অপু সরকারের। সংসার টানতে এখন জেলা বিজেপি কার্যালয়ের সামনে ঠেলাগাড়িতে শরবত বিক্রি করেন তিনি। নাম জানতে চাইলে বলেন, তিনি ‘জবলেস জুসওয়ালা’।

Advertisement

বিবেকানন্দ কলেজের স্নাতক অপু ২০১০ সালে একটি সংস্থায় কাজে যোগ দিয়েছিলেন। কোভিড-তরঙ্গ এ দেশে ধাক্কা মারার ঠিক আগে, যোগ দিয়েছিলেন অন্য এক সংস্থায়। কিন্তু, সেখানে বেশি দিন টিকতে পারেননি। করোনা-কালে কাজ হারাতে হয়। কোভিড-সংক্রমণ কমলে অল্প বেতনে আর এক সংস্থায় সেলস্‌ম্যানের কাজে যোগ দেন অপু। কিন্তু ‘টার্গেট’ পূরণ না হওয়ায় ইস্তফা দিতে বাধ্য হন। তার পরে, অনেক জায়গায় ইন্টারভিউ দিয়েও চাকরি মেলেনি, দাবি অপুর।

তাঁর কথায়, ‘‘কর্মচ্যুত হয়ে তখন দিশাহীন অবস্থা আমার। আমিই সংসারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য। মা, স্ত্রী ও বাচ্চাকে নিয়ে আমার সংসার। হোটেল ম্যানেজমেন্ট পাশ করা এক বন্ধুর পরামর্শে সপ্তাহ দু’য়েক আগে শরবতের দোকান চালু করি। দোকান বললে ভুল হবে। ঠেলাগাড়িতে শরবত বিক্রি করি। নিজের পরিচয় দিই ওই নামে।’’

Advertisement

গরম বাড়তেই একটু একটু করে ভিড় বাড়ছে অপুর ঠেলাগাড়ির সামনে। তাঁর কথায়, ‘‘চাকরি হারিয়ে ব্যবসা শুরু করেছি। অনেকেই শরবতের তারিফ করেন। এটাই আমার প্রাপ্তি।’’

প্রতিদিন সন্ধ্যায় অপুকে ব্যবসায় সাহায্য করতে আসেন বন্ধু অভিজিৎ গুহ ও সুপ্রিয় মহন্ত। ‘মোজিতো’, ‘মশলা সোডা’, ‘মশলা কোল্ড ড্রিঙ্কস’ ও ‘ম্যাঙ্গো জুস’ পাওয়া যায় তাঁর ঠেলাগাড়িতে। লস্যিও রাখেন।

সুপ্রিয় বলেন, ‘‘আমরা একই সংস্থায় কাজ করতাম। অপুকে ওর প্রাপ্য বেতন দেওয়া হয়নি। তাই ও কাজ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল।’’ অপুকে শরবতের ব্যবসা শুরুর পরামর্শ দিয়েছিলেন যে বন্ধু, সেই দেবাশিস রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘ওর লড়াইকে কুর্ণিশ জানাই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement