প্রতীকী চিত্র।
পুলিশকর্মীর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় এ বার কবিতা সাহা নামে এক মহিলাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। আউশগ্রামের ছোড়া কলোনির বাসিন্দা পুলিশকর্মী সুশান্ত বিশ্বাসের বাড়িতে ৭ জানুয়ারি ডাকাতি হয়। বুধবার বর্ধমান মহিলা থানার সহায়তায় কবিতাকে শহর থেকে গ্রেফতার করে আউশগ্রামের ছোড়া ফাঁড়ির পুলিশ। পুলিশ জানায়, ধৃত দুর্গাপুরের শ্রীনগরপল্লির বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার বর্ধমান আদালতে চার দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত ঘটনায় মোট আট জন ধরা পড়ল।
পুলিশের দাবি, কবিতা মূলত ‘রিসিভার’-এর কাজ করতেন। অর্থাৎ ডাকাতির সোনা-রূপার গয়না কবিতার কাছে রাখা হত। পরে সেগুলি বিক্রি করত সে। মহিলা হওয়ায় গয়না বিক্রিতে তার উপরে সন্দেহ হবে না, এ কারণেই ডাকাত দলে নেওয়া হয়েছিল তাকে। পুলিশ আরও জানায়, জেরায় কবিতা জানিয়েছে, ঘটনার পরে ৪-৫ জন ওর বাড়িতে ছিল। কিছু সোনার গয়না দিয়ে সেগুলি বিক্রি করতে বলা হয়। ইতিমধ্যেই কিছুটা বিক্রিও করেছে সে।
বছর বত্রিশের কবিতার বাপের বাড়ি এগারো মাইলের বিলপাড়ায়। তার এক মেয়ে। স্বামী দিনমজুর। থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরে বাড়ি হলেও ঘটনার পর থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল কবিতা। ইতিমধ্যে তার দাদা তন্ময় দাস-সহ দু’জনকে কেরল থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ডাকাতির পর থেকে সেখানে রাজমিস্ত্রীর কাজে চলে গিয়েছিল তন্ময় ওরফে গদাই।
১৭ ডিসেম্বর আউশগ্রাম থানার পলাশতলার বাসিন্দা অনিলকান্তি দত্তের বাড়িতে দরজা ভেঙে বাড়ির পুরুষদের হাত, পা, চোখ বেঁধে ডাকাতি হয়। সেখানে নগদ কয়েক হাজার টাকা, কয়েক ভরি সোনা ও রূপার গয়না, বিদেশি মুদ্রা নিয়ে যায় ডাকাতেরা। ঘটনার সপ্তাহ তিনেক পরে ৭ জানুয়ারি রাত দু’টো নাগাদ ছোড়া কলোনির কারগিলপাড়ার বাসিন্দা পুলিশকর্মী সুশান্ত বিশ্বাসের বাড়িতে একই কায়দায় ডাকাতি হয়। আওয়াজ পেয়ে পড়শি এক যুবক সেখানে গেলে তাঁকে ভোজালির কোপ মেরে পালায় ডাকাত দল। যাওয়ার আগে বাড়ির সদস্যদের একটা ঘরের ঢুকিয়ে বাইরে থেকে শিকল তুলে
দিয়ে যায়।
জেলার পুলিশ সুপার আমনদীপ দশ সদস্যের ‘সিট’ (স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম) গঠন করে তদন্ত শুরু করেন। কবিতাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে গয়না উদ্ধারের পাশাপাশি আর কোন কোন ঘটনায় সে জড়িত, তা জানার চেষ্টা চালানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
অন্য ঘটনাগুলির ক্ষেত্রেও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। নজর দেওয়া হচ্ছে এলাকার নিরাপত্তাতেও।