Complaints

রেলের জমিতে পাট্টা দেওয়ার নামে টাকা, অভিযোগে ক্ষোভ

সুনীল দাবি করেন, নিয়ম অনুযায়ী সঙ্গে ‘এফিডেভিট’ দিয়ে সাদা কাগজে পাট্টার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন বাসিন্দাদের একাংশ। সরকারি আমিন দিয়ে জমির মাপজোক হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:৩৯
Share:

দুর্গাপুরে শনিবার। নিজস্ব চিত্র।

রেলের জমিতে পাট্টা দেওয়ার নামে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলকর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে। ফ্রেট করিডরের জন্য রেল উচ্ছেদ নোটিস ধরাতেই তৃণমূল কার্যালয়ে এসে প্রাক্তন বরো চেয়ারম্যান ও স্থানীয় কাউন্সিলর সুনীল চট্টোপাধ্যায়কে ঘিরে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন বাসিন্দাদের একাংশ। শনিবার দুর্গাপুরের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনা। পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ করা যাবে না। এই দাবিতে তিনি শেষ পর্যন্ত আন্দোলন করবেন। এমন আশ্বাস দিয়ে বাসিন্দাদের ক্ষোভ সামাল দেন সুনীল।

Advertisement

রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ফ্রেট করিডর নির্মাণের জন্য দুর্গাপুরে রেলের জায়গায় বসবাসকারীদের বছরখানেক ধরে লাগাতার উচ্ছেদ নোটিস দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরসভার ২৯, ৩০, ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৪১, ৪৩ প্রভৃতি ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় রেললাইনের দু’দিকে বহু মানুষ প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে বসবাস করছেন। পুরসভা ওই সব বাড়িতে পানীয় জল, বিদ্যুৎ, নিকাশি-সহ নাগরিক পরিষেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এমনই একটি জায়গা হল ঘুসিকডাঙা।

স্থানীয়েরা জানান, শনিবার ঘুসিকডাঙা এলাকার বাড়ি-বাড়ি উচ্ছেদের নোটিস পাঠায় রেল। এলাকায় প্রায় ২৫০টি বাড়ি রয়েছে। পাট্টা দেওয়ার নাম করে মাপজোকের জন্য প্রতি বাড়ি থেকে টাকা নিয়েছেন তৃণমূলকর্মীরা, সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে এমনই অভিযোগ বাসিন্দাদের। স্থানীয় বাসিন্দা গৌতম সিংহ বলেন, “সুনীল চট্টোপাধ্যায় আমাদের পাট্টার জন্য আবেদন জানাতে বলেন। আবেদন জানানোর পরে পার্টি অফিস থেকে কয়েক জন এসে মাপজোকের নামে বাড়ি-বাড়ি এক হাজার টাকা করে নিয়েছিলেন।’’ তাঁরা জানান, দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে এখানে বসবাস করছেন। পাট্টার আবেদন জানানোর সময় এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা হিসেবে জমা দেওয়া ‘এফিডেভিট’-এর কাগজ রেলকর্মীদের দেখালে তাঁরা জানিয়ে দেন, জমি রেলের। এক মহিলা বলেন, “আমাদের দিন আনা দিন খাওয়া পরিবার। জমি যদি রেলেরই, তা হলে পাট্টা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কেন পরিবার পিছু টাকা নেওয়া হয়েছে?” সগড়ভাঙার তৃণমূলের কার্যালয়ে এসে এ ভাবেই ক্ষোভ উগরে দেন তাঁরা।

Advertisement

সুনীল দাবি করেন, নিয়ম অনুযায়ী সঙ্গে ‘এফিডেভিট’ দিয়ে সাদা কাগজে পাট্টার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন বাসিন্দাদের একাংশ। সরকারি আমিন দিয়ে জমির মাপজোক হয়েছে। তাঁর দাবি, “তৃণমূল কেউ কোনও টাকা নেননি।” তবে বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, “গরিব মানুষকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে তৃণমূল। এখন ঘুসিকডাঙার মানুষ সেটা বুঝেছেন। তাই দলীয় কার্যালয় ঘিরে বিক্ষোভ হচ্ছে।” বিজেপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক তথা বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের প্রতিক্রিয়া, “তৃণমূল যে সাধারণ মানুষের থেকে কার্যত তোলাবাজি করে, এটা তার প্রমাণ।” সুনীল যদিও ফের দাবি করেন, “আমার বিরুদ্ধে কারও ক্ষোভ নেই। সাফ কথা, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে কোনও ভাবেই উচ্ছেদ করা যাবে না।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement