এখানেই মেলে দেহ। নিজস্ব চিত্র।
গলার নলি কেটে যুবককে খুনের অভিযোগ উঠেছে তাঁরই এক আত্মীয়ের বিরুদ্ধে। নিহত নাজির শেখ (৩৮) কালনা ২ ব্লকের কল্যাণপুরের বাসিন্দা। তাঁর পরিবারের লোকজনের দাবি, মঙ্গলবার রাতে নাজিরকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান তাঁর প্রাক্তন শ্যালক হাসেম শেখ। হাসেমই পুরনো বিবাদের জেরে তাঁকে খুন করেছে বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত পলাতক। সাহাপুর খাঁ পাড়ার বাসিন্দা ওই যুবকের খোঁজ চলছে।
নিহতের বাবা রাজাহার শেখ জানান, চার ছেলের মধ্যে নাজিরই বড়। বছর দশেক আগে নদিয়ার শান্তিপুর এলাকার বাসিন্দা মুন্নি বিবির সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের আট বছর পরে বিচ্ছেদ হয়ে যায় তাঁদের। বর্তমানে মুন্নি বিবি বাপের বাড়িতেই থাকেন। আর নাজির আমদাবাদের একটি হোটেলে কাজ করেন। দীর্ঘ দিন পরে সোমবার তিনি বাড়ি ফেরেন বলে পরিবারের দাবি। রাজাহার শেখ পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাত ১০টা ৪৫ নাগাদ ছেলেকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় হাসেম। মোটরবাইকে চাপিয়ে পূর্বসাহাপুর এলাকার একটি জনস্বাস্থ্য কারিগরি পাম্পের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। প্রায় ৪০ মিনিট পরে সেখান থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় নাজিরের খোঁজ মেলে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত বলে জানান তাঁকে। লিখিত অভিযোগে নিহতের বাবার দাবি, বোনের বিবাহবিচ্ছেদের কারণে হাসেমের রাগ ছিল। সেই কারণেই ডেকে নিয়ে গিয়ে খুনের পরিকল্পনা করে সে।
বুধবার কাঁদতে কাঁদতে কালনা থানায় দাঁড়িয়ে বৃদ্ধ বলেন, ‘‘বিয়েতে ছেলে ৩০ হাজার টাকা নগদ নিয়েছিল। ওই টাকা ফেরত দিতেই ভিন্ রাজ্যে কাজে গিয়েছিল। ফিরে এসে টাকা শোধ করে দেওয়ার কথাও বলে। এর পরেও হাসেম ওকে কেন খুন করল বুঝতে পারছি না।’’ নিহতের ছোট ভাই কুরবান শেখেরও দাবি, ‘‘মঙ্গলবার রাতে বাড়িতে এসে দাদার সঙ্গে দেখা করে চেঁচামেচি করছিল হাসেম। আবার দাদাকে বুঝিয়ে বাড়ি থেকে নিয়েও গিয়েছিল ও।’’
পুলিশের দাবি, ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রথমে নাজিরের পায়ে আঘাত করা হয়। কাটা হয় গলির নলি। এলাকার একটি সিসিটিভি থেকে যন্ত্রণাকাতর নাজিরের কথোপকথনও পাওয়া গিয়েছে বলে জানান তদন্তকারীরা। সেখানে নাজিরকে স্থানীয় এক জনকে শ্যালকই তাঁকে খুন করেছেন, বলতেও শোনা যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ঘটনার পরেই পালায় হাসেম।