TMC

নেতার বিরুদ্ধে তোলাবাজি, মারের নালিশ

ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে ওই তৃণমূল নেতা ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২১ ০৬:২৪
Share:

থানার সামনে জটলা। নিজস্ব চিত্র।

এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে তোলাবাজি ও মারধরের অভিযোগ তুললেন খুচরো ব্যবসায়ীদের একাংশ। রবিবার সকালে দুর্গাপুরের মুচিপাড়া বাজারের ঘটনা। অভিযুক্ত স্থানীয় তৃণমূল নেতা খোকন রুইদাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে ব্যবসায়ীরা বিধাননগর ফাঁড়িতে বিক্ষোভ দেখান। ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে ওই তৃণমূল নেতা ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে ব্যবসা বন্ধের হুমকি দেওয়া হয় সমিতির তরফে। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। অভিযোগ মানেননি খোকনবাবু।

Advertisement

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৪-র জুলাইয়ে তৃণমূলের তৎকালীন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের কাছে খোকনবাবুর বিরুদ্ধে সগড়ভাঙার ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প কারখানাগুলিতে সিন্ডিকেট ও তোলাবাজি করার অভিযোগ জানিয়েছিলেন দুর্গাপুর পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক প্রয়াত নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই মাসেই খোকনবাবুর বিরুদ্ধে অর্থলগ্নি সংস্থার নাম করে প্রতারণার মামলা দায়ের হয় দুর্গাপুর আদালতে। আদালতের নির্দেশে পুলিশ খোকনবাবুকে গ্রেফতার করে। শেষ পর্যন্ত ওই বছর অক্টোবরে দল থেকে তাঁকে ছ’বছরের জন্য বহিষ্কার করে। যদিও, ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগেই তাঁকে দলে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।

ফের তাঁর বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ উঠেছে দুর্গাপুরে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মুচিপাড়া ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক গৌতম রুইদাস লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, খোকনবাবু ও তাঁর অনুগামীরা বাজারে কোনও ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১০ হাজার, কারওর কাছে ২০ হাজার, কারওর কাছে ১ লক্ষ টাকা দাবি করছেন। না দেওয়ায় রবিবার সকালে কয়েকজন ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়েছে। বাজারের খাবারের দোকানদার সুরজ প্রসাদের দাবি, ‘‘আমার কাছ থেকে ১ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়েছে। না দেওয়ায় শনিবার হুমকি দেওয়া হয়। আমি থানায় বিষয়টি জানাই। রবিবার সকালে দোকান খুলতেই গাড়িতে করে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়। সাত জনকে মারধর করা হয়।’’ তাঁর বাড়িতেও হামলা করেছে বলে অভিযোগ। ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক গৌতমবাবু বলেন, ‘‘এমনিতেই কড়াকড়ির জেরে ২-৩ ঘণ্টার বেশি ব্যবসা হচ্ছে না। এই অবস্থায় এমন তোলাবাজি শুরু হলে ব্যবসা লাটে উঠবে। তা ছাড়া ব্যবসায়ীদের গায়ে হাত তোলা হয়েছে। এর একটা বিহিত চাই।’’

Advertisement

অভিযোগ অবশ্য মানতে চাননি খোকনবাবু। তাঁর দাবি, ‘‘মুচিপাড়া বাজারের ব্যবসায়ীদের একাংশের সঙ্গে মুচিপাড়া গ্রামের একাংশের বিবাদের জেরে এই ঘটনা। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হচ্ছে।’’ এ দিকে ব্যবসায়ীদের ‘মারধরের’ অভিযোগ পেয়ে বিধাননগর ফাঁড়িতে যান স্থানীয় ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মেয়র পারিষদ (শিক্ষা) অঙ্কিতা চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘এ ধরনের ঘটনা তৃণমূল সমর্থন করে না। ভবিষ্যতে যাতে এমন আর না হয় সেটা চাই। দলের নাম করে যে বা যাঁরা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন, তাঁরা ঠিক করেননি।’’ যদিও পরে পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মধ্যে আলোচনায় বিষয়টি মিটে গিয়েছে বলে দাবি কাউন্সিলরের। তাঁর দাবি, ‘‘অভিযুক্তেরা ভুল স্বীকার করে নিয়েছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement