রাতুড়িয়া-অঙ্গদপুরে আধিকারিককে ঘিরে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
চার মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরের রাতুড়িয়া-অঙ্গদপুর শিল্পতালুকের একটি বেসরকারি ফেরো অ্যালয় কারখানায় সপরিবারে বিক্ষোভ দেখালেন ঠিকা শ্রমিকেরা। তাঁদের অভিযোগ, বেতন মিটিয়ে দেওয়া হবে বলে বারবার সময় চেয়েছেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, বাজারে চাহিদা না থাকায় গত নভেম্বর থেকে কারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। দ্রুত বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কারখানাটি দু’দশকের পুরনো। প্রায় তিনশো ঠিকা শ্রমিক কাজ করেন। বছর দু’য়েক ধরে কারখানায় নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। বাজারে উৎপাদিত পণ্যের চাহিদা নেই জানিয়ে প্রথম দিকে উৎপাদনের মাত্রা কমিয়ে দেন কর্তৃপক্ষ। এর পরে নভেম্বরে উৎপাদন একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। তবে কর্তৃপক্ষ কোনও ঠিকা শ্রমিককে ছাঁটাই করেননি। শ্রমিকদের অভিযোগ, মার্চ পর্যন্ত তাঁরা বেতন পেয়েছেন। তার পরে আর বেতন না পাওয়ায় পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তাঁরা। এ দিন কারখানার সামনে তাঁরা সপরিবারে বিক্ষোভ শুরু করেন। কর্তৃপক্ষের তরফে এক আধিকারিক কথা বলতে এলে তাঁকে ঘিরে ক্ষোভ জানাতে থাকেন তাঁরা।
বিক্ষোভকারীদের তরফে উত্তম দে বলেন, ‘‘প্রায় ২৩ বছর ধরে কাজ করছি। সামনেই দুর্গাপুজো। তার আগে এমন পরিস্থিতিতে আমরা খুব বিপাকে পড়েছি। গত বছর নানা টালবাহানার পরে বোনাস দেননি কর্তৃপক্ষ। এ বার চার মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। এ ভাবে চলতে পারে না।’’ তাঁর দাবি, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে কর্তৃপক্ষ তাঁদের পাওনাগন্ডা মিটিয়ে দিক। তাঁরা কেউ-কেউ অন্য কারখানায় কাজের জন্য চেষ্টা করছেন বলেও দাবি করেন। ঠিকা শ্রমিক বিকাশ নাগের বক্তব্য, ‘‘আমাদের একাধিক বার বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট দিন বলা হয়েছে। কিন্তু বারবারই তা পেরিয়ে গিয়েছে। চরম অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে আমাদের।’’
কারখানার আধিকারিক সিবিএ ভার্মা জানান, উৎপাদন বন্ধ থাকায় বেতনের জন্য অর্থের সংস্থান করতে সমস্যা হচ্ছে। আপাতত দু’মাসের বকেয়া শনিবার মিটিয়ে দেওয়া হবে বলে ঠিক হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের সে কথা জানালে তাঁরা এক সঙ্গে চার মাসের বকেয়া মেটানোর দাবিতে তাঁকে ঘিরে ধরে ক্ষোভ জানাতে থাকেন। তাঁদের আরও দাবি, ৮ অগস্ট থেকে কয়েকজন ঠিকা শ্রমিককে মৌখিক ভাবে কাজে আসতে বারণ করা হয়েছে। ওই আধিকারিক শুধু জানান, পরিস্থিতির কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন।