এই অস্থায়ী কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নিজস্ব চিত্র।
জমি কেনাবেচার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের তৈরি একটি কার্যালয় শনিবার সকালে পুড়িয়ে দিলেন অন্ডালের দক্ষিণখণ্ড, কাজোড়া, ভাদুর গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, ওই এলাকায় বেসরকারি খনি প্রকল্পের জন্য বিক্ষিপ্ত ভাবে জমি কিনছে একটি দালাল চক্র। কেনা জমিতে ছাই ফেলছে ‘মাফিয়ারা’। ফলে পাশের জমির ক্ষতি হচ্ছে। মালিকদের কম দামে জমি বিক্রিতে বাধ্য করতে পরিকল্পিত ভাবেই এই কাজ করা হচ্ছে বলে দাবি তাঁদের।
ইসিএলের মধুজোড় কোলিয়ারি এলাকায় বেসরকারি এক সংস্থা শেয়ারিং পদ্ধতিতে খনি চালু করবে। এর জন্য প্রায় ২০০০ একর জমি প্রয়োজন। তার মধ্যে কম-বেশি ৭০ শতাংশ জমি ইসিএলের নিজস্ব। বাকি ৩০ শতাংশ জমি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন। এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, তাঁদের থেকে সরাসরি জমি কিনতে হবে ইসিএলকে। দালালের মাধ্যমে কেনা যাবে না।
দক্ষিণখণ্ডে জমির কারবারিরা বাঁশের একটি অস্থায়ী কার্যালয় তৈরি করেছিল। এ দিন সকালে কৃষিজমি জীবন জীবিকা রক্ষা কমিটির ব্যানার হাতে শ’খানেক গ্রামবাসী মিছিল করে এসে সেই কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। তাঁদের অভিযোগ, দালালরা প্রকল্পের প্রয়োজনে জমি দরকার বলে বিক্ষিপ্ত ভাবে ব্যক্তিগত মালিকাধীন বেশ কিছু জমি কিনেছে। অনেকে বিক্রি করেছেন। অনেকে করেননি। জমি বিক্রিতে অনিচ্ছুক জমি সংলগ্ন জমিগুলি দালালরা কিনে সেখানে ছাই ফেলছে। তার ফলে জমি বিক্রি করেননি এমন কৃষকেরা তাঁদের জমিতে চাষ করতে পারছেন না।’’
স্থানীয় বাসিন্দা উজ্জল পাল, তপন মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘এমন কিছু জমি কেনা হয়েছে, মিউটেশনের পরে দেখা যাচ্ছে, সেগুলিতে বেঙ্গালুরুর দুই ব্যক্তির নাম আছে। এর থেকেই পরিষ্কার, দালালরা স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে জমি কিনে তা ইসিএলের কাছে বিক্রির পরিকল্পনা নিয়েছে। স্থানীয়দের প্রতারণা করা হচ্ছে।’’ উজ্জলের অভিযোগ, ‘‘আমাদের দেবোত্তর সম্পত্তির চার দিকের জমি কিনে নিয়েছে দালালরা। ওদের দেওয়া দামে বিক্রি না করলে জোর করে জমি দখল করার হুমকি দিচ্ছে দালালচক্র।’’
স্থানীয় বাসিন্দা শ্রীকান্ত দে, সুবীর মণ্ডলের দাবি, ১৯৯০-১৯৯৪ পর্যন্ত মধুজোড় কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষ ৯০ একর জমি অধিগ্রহণ করেছিলেন। সংস্থার বিধি মেনে তিন একর পিছু এক জনের চাকরি পাওয়ার কথা। সেই মোতাবেক ৩০ জনকে এখনই চাকরি দিতে হবে। এ ছাড়া, খোলামুখ খনির জন্য প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণ করে নিয়ম অনুয়ায়ী চাকরি দিতে হবে। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, এ দিন তাঁরা প্রতীকী প্রতিবাদ দেখিয়েছেন। দাবি পুরণ না হলে খনির কোনও কাজই করতে দেওয়া হবে না।
ইসিএলের কাজোড়া এরিয়া কর্তৃপক্ষ জানান, সমস্ত বিষয় গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।