প্রচারে: দুর্গাপুরে তৃণমূল প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়ে রয়েছেন অপূর্ব মুখোপাধ্যায়, স্বপন দেবনাথ, দেবু টুডু।
দলের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে তাঁকে বেশ কিছু দিন দেখা যায়নি। দুর্গাপুর পুরভোটে তৃণমূলের প্রার্থিতালিকা প্রকাশের দিনেই ‘ভোট-রাজনীতি’ থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নেওয়ার কথা জানান। কিন্তু দুর্গাপুর পুরসভার বিদায়ী মেয়র, সেই অপূর্ব মুখোপাধ্যায়কেই শুক্রবার থেকে প্রচার-ময়দানে দেখা গিয়েছে। তৃণমূল সূত্রে দাবি, নানা বিষয়ে দলের অন্দরে ‘ক্ষোভ’ দেখে অপূর্ববাবুকে মাঠে নামতে হয়েছে।
২০১৬-র বিধানসভা ভোটে প্রায় ৪৪ হাজার ভোটে হেরে গিয়েছিলেন অপূর্ববাবু। তার পরে থেকেই দলের নানা কর্মসূচি, এমনকী দলের পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাসের সভাতেও দেখা যায়নি অপূর্ববাবুকে। তাঁকে ‘উপেক্ষা’ করা হচ্ছে, ঘনিষ্ঠ মহলে অপূর্ববাবুকে অভিযোগও জানাচ্ছিলেন বলে তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি।
মঙ্গলবার, আসানসোলের এক নেতার উপস্থিতিতে পুরভোটে তৃণমূলের প্রার্থিতালিকা প্রকাশ করা হয়। সেই দিই অপূর্ববাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বলেন, ‘‘দলের কাজ করব। বাড়ি আর ভিড়িঙ্গির দলীয় কার্যালয়ের বাইরে আপাতত কোথাও যাব না।’’ যদিও নির্বাচন ঘোষণার অনেক আগেই প্রাক্তন মেয়র জানিয়েছিলেন, আর ভোটে
দাঁড়াবেন না।
তা হলে ফের ভোট-প্রচারে কেন? তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের দাবি, এর মূলে রয়েছে প্রার্থিতালিকা। সেখানে দেখা যায়, নানা কারণে বাদ গিয়েছে, বিদায়ী ১৪ জন কাউন্সিলরের নাম। এর পরে বুধবার থেকেই তাঁদের একাংশ ‘নির্দল’ প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র তুলতে শুরু করেন। যাঁদের অধিকাংশই অপূর্ববাবুর ঘনিষ্ঠ হিসেবে আবার তৃণমূলের অন্দরে পরিচিত। তা ছাড়া আসানসোলের তৃণমূল নেতাদের ‘খবরদারি’ নিয়েও ক্ষোভ তৈরি হয় দুর্গাপুরে তৃণমূলের অন্দরে।
দুর্গাপুরে বিজেপি-র মিছিলে বাবুল সুপ্রিয়। শুক্রবার
পরিস্থিতি ঘোরালো আঁচ করে বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরে আসেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। স্বপনবাবুর সঙ্গে অপূর্ববাবুর বরাবরের সুসম্পর্ক বলে দাবি তৃণমূল কর্মীদের। বৈঠকের পরেই মন্ত্রী অপূর্ববাবুকে পাশে বসিয়ে বলেন, ‘‘অপূর্ববাবু আমাদের নেতা।’’
এর পরেই শুক্রবার থেকে মাঠে নেমে পড়েন অপূর্ববাবু। এ দিন মনোনয়নপত্র জমা দেন বিদায়ী কাউন্সিলর প্রভাত চট্টোপাধ্যায়, আইনজীবী দেবব্রত সাঁই-সহ কয়েক জন তৃণমূল প্রার্থী। হঠাৎ সেই সময়ে হাজির হন অপূর্ববাবু। সঙ্গে ছিলেন স্বপন দেবনাথ ও দেবু টুডু। সেখানেই অপূর্ববাবু বলেন, ‘‘আমার দলের ছেলে-মেয়েরা মনোনয়ন জমা করছে। তাদের পাশে থাকা আমার দায়িত্ব।’’ তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ‘বিক্ষুব্ধ’দের প্রতি তাঁর বার্তা, ‘‘দল যাঁদের মনোনীত করেছে, তাঁরাই প্রতীক পাবেন। তাঁরাই দলীয় প্রার্থী। তাঁদের সমর্থনেই আমি প্রচার চালাব।’’
প্রসঙ্গত, বিধানসভা ভোটে যাঁর কাছে হেরেছিলেন, সেই কংগ্রেস বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের অনুগামী বলে পরিচিত তৃণমূল প্রার্থীদের ওয়ার্ডেও প্রচার করবেন কী অপূর্ববাবু? তিনি বলেন, ‘‘দল বললে ৪৩টি ওয়ার্ডেই প্রচার করব।’’
—নিজস্ব চিত্র