প্রতীকী ছবি।
ছাত্রভর্তি নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নিষেধাজ্ঞায় ফাঁপরে পড়েছেন দুর্গাপুরের আইকিউ সিটি মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিয়ে আগেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। আগামি সপ্তাহে শুনানিও রয়েছে। এখন সে দিকে তাকিয়েই আশায় বুক বাঁধছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।
দুর্গাপুরের শোভাপুরের ওই কলেজে ২০১৩ সালে এমবিবিএসের পাঠক্রম চালু হয়। গত চার বছর দেড়শো জন করে পড়ুয়া ভর্তি হয়েছেন। কিন্তু গত নভেম্বরে কলেজ পরিদর্শনের পরে অসন্তোষ প্রকাশ করে ‘মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া’ (এমসিআই)। তারা নতুন শিক্ষাবর্ষে ছাত্র ভর্তির অনুমতি আটকে দেওয়ার সুপারিশ পাঠায় স্বাস্থ্য মন্ত্রকে। সেই সুপারিশ মেনে স্বাস্থ্য মন্ত্রক মে মাসে ওই কলেজে ছাত্র ভর্তি বন্ধের নির্দেশ দেয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ তার বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন। ১ অগস্ট সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার নির্দেশ দেয়। তবে ২৯ অগস্ট নতুন করে পাঠানো এক নির্দেশিকায় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, সিদ্ধান্ত বদল হচ্ছে না। অর্থাৎ, ছাত্র ভর্তির অনুমতি বাতিল করা হয়েছে। এর পরেই কলেজের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
আইকিউ সিটির দায়িত্বে থাকা অন্যতম সংস্থা সিনার্জি গ্রুপের চেয়ারম্যান সিসিল অ্যান্টনি অবশ্য এ দিন বলেন, ‘‘বিচারাধীন বিষয় নিয়ে কোনও মন্তব্য করা উচিত নয়।’’ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ এয়ার ভাইস মার্শাল রাজবীর ভালয়ারও কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি শিক্ষাবর্ষে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। হাতে এখনও সময় আছে। ৫ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টে ফের মামলার শুনানি আছে। আগের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার নির্দেশ দেওয়ায় তাঁদের আবেদনের যে যৌক্তিকতা রয়েছে তা প্রমাণ হয়েছে, দাবি কলেজ কর্তৃপক্ষের একাংশের। তাই পরবর্তী শুনানিতেও সুপ্রিম কোর্ট ইতিবাচক নির্দেশ দেবে, আশা করছেন তাঁরা।
কিন্তু এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কলেজে পাঠরত এমবিবিএস পড়ুয়ারা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তাঁদের এক জন বলেন, ‘‘এর ফলে কলেজের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। কর্মজীবনে অপ্রিয় পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে কি না, সেই চিন্তায় রয়েছি।’’ আর এক পড়ুয়ার কথায়, ‘‘কেন্দ্রীয় প্রবেশিকা পরীক্ষার মেধাতালিকায় জায়গা পেয়ে বহু টাকা খরচ করে ডাক্তারি পড়তে এসেছি। ছাত্র ভর্তি আটকে গেলে তো আমাদের পাঠক্রমের মান নিয়েও প্রশ্ন উঠবে!’’ কলেজের এক শিক্ষক যদিও দাবি করেন, ‘‘কিছু সরকারি মেডিক্যাল কলেজের থেকেও এখানকার পরিকাঠামো আধুনিক ও যথাযথ।’’ তার পরেও এমন পরিস্থিতি কী ভাবে তৈরি হয়েছে, সে নিয়েই সংশয় প্রকাশ করেন তিনি।