Sal Leaves

শালপাতার দাম কমেছে, সমস্যায় কাঁকসার গ্রাম

হানা দিয়েছে করোনা। কমেছে শালপাতার জিনিস বিক্রি। ফলে, এই ব্যবসায় যুক্ত আদিবাসী প্রধান গ্রামের বাসিন্দাদের ঘরে জাঁকিয়ে বসছে অভাব।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

কাঁকসা শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২১ ০৬:২৫
Share:

কাঁকসার চুয়া গ্রামে। নিজস্ব চিত্র।

শালপাতার ব্যবসাকে মজবুত করে কাঁকসার গ্রামীণ অর্থনীতিতে জোয়ার আনতে চায় প্রশাসন। সেই লক্ষ্যে ‘শালপাতার ক্লাস্টার’ তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে। যদিও, তা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। এরই মধ্যে হানা দিয়েছে করোনা। কমেছে শালপাতার জিনিস বিক্রি। ফলে, এই ব্যবসায় যুক্ত আদিবাসী প্রধান গ্রামের বাসিন্দাদের ঘরে জাঁকিয়ে বসছে অভাব।

Advertisement

ব্লকের জঙ্গলঘেরা অনেক গ্রামের বাসিন্দাদের সংসার চলে শালপাতা সংগ্রহ করে। ওই কাজে যুক্ত মূলত মহিলারা। কাঠি দিয়ে শালপাতা বুনে থালা-সহ নানা জিনিস বানান তাঁরা। সেগুলি তাঁরা বিক্রি করেন মহাজনদের কাছে। করোনা রুখতে পরিবহণ-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নানা বিধিনিষেধ জারি করেছে প্রশাসন। ফলে, সে সব কিনতে কাঁকসায় আসতে পারছেন না মহাজনেরা। অগত্যা, বাধ্য হয়েই মহাজনের ঘরে শালপাতা পৌঁছে দিতে হচ্ছে গ্রামবাসীকে। তাঁদের একাংশের অভিযোগ, করোনা-উদ্ভূত পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে মহাজনেরা শালপাতাল দাম কমিয়ে দিয়েছেন। বাধ্য হয়েই কম দামে মাল বেচতে হচ্ছে তাঁদের।

কলেজ বন্ধ থাকায় মলানদিঘি পঞ্চায়েতের চুয়া গ্রামের সঙ্গীতা মুর্মু শালপাতার থালা তৈরির কাজে যুক্ত হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘করোনা আবহে যাতায়াতেও বিধিনিষেধ জারি হয়েছে। অনেক মহাজন গ্রামে আসছেন না। আমরাই কোনও রকমে শালপাতার থালা তাঁদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি।’’

Advertisement

ব্লকে আদিবাসী গ্রামের সংখ্যা কমবেশি ৭৫। ত্রিলোকচন্দ্রপুর, মলানদিঘি, বনকাটি ও গোপালপুর পঞ্চায়েতে আদিবাসী গ্রামের সংখ্যা সবথেকে বেশি। এই গ্রামগুলি রয়েছে জঙ্গলের পাশে বা মধ্যে। শালপাতার থালা তৈরির কাজে যুক্ত মহিলারা জানাচ্ছেন, পাতা সংগ্রহ করে তা থেকে এক হাজার থালা বানাতে দু’দিন লাগে। সেই পাতা বিক্রি করলে মেলে ২৫০ টাকা মেলে। কিন্তু, করোনা আবহে এখন মিলছে ১৮০- ২০০ টাকা। বিধিনিষেধ জারি হওয়ায় তাঁরা দলবদ্ধ ভাবে শালপাতা সংগ্রহে জঙ্গলে যেতে পারছেন না। তাঁদের দাবি, ‘‘আমাদের রোজগার অনেকটাই এই কাজের উপরে নির্ভরশীল। কিন্তু মহাজনের কাছে এখন ন্যায্য দাম মিলছে না।’’ এই অবস্থায় সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তাঁরা। এ বিষয়ে বিডিও (কাঁকসা) সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। কারও কোনও সমস্যা হলে, তা নিশ্চয়ই দেখা হবে।’’

কাঁকসার এক মহাজন দেবদাস মণ্ডলের বক্তব্য, ‘‘গত বছর থেকেই ব্যবসা মার খাচ্ছে। চলতি বছরের প্রথম দিকে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছিল। এখন পরিবহণে বিধিনিষেধ জারি হওয়ায় শালপাতার জিনিসপত্র বাইরে পাঠানো
যাচ্ছে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement