গ্রামের অনেকেরই দাবি, ওই অভিভাবকের জন্য গ্রামের বদনাম হয়ে গেল।
ছেলেকে চড় মারার ‘অপরাধে’ ক্লাসে ঢুকে শিক্ষককে মাটিতে ফেলে বেধড়ক মারধর করছিলেন ওই ছাত্রের বাবা। খবর পেয়ে গ্রামবাসীরা এসে মাথায় জল ঢেলে ঠান্ডা করেন ওই অভিভাবককে। পরে অবশ্য অন্যায় স্বীকার করে ক্ষমা চান তিনি।
সোমবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে নবাবহাট বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি প্রাথমিক স্কুলে। ওই শিক্ষক এ নিয়ে কোনও কথা বলতে রাজি হননি। বর্ধমান শহরের নীলপুরে তাঁর বাড়িতে গেলেও তিনি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে দেখা করেননি। তবে ওই স্কুলের টিচার ইন চার্জ রীনা দে-র দাবি, “ওই শিক্ষক মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন। আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। নিরাপত্তারও অভাব বোধ করছি।’’
স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই ছাত্র প্রাক্ প্রাথমিকে পড়ে। স্কুলের পাশেই বাড়ি তার। এ দিন দুষ্টুমি করায় সম্ভবত তাকে বকাবকি করেন ওই শিক্ষক। সে বাড়ি গিয়ে ঘটনার কথা জানালে ক্লাসে এসে হাজির হন তার বাবা। স্কুলের মিড-ডে মিলের রাঁধুনি ফজিলা বিবির কথায়, “ক্লাস থেকে জামার কলার ধরে টানতে টানতে বাইরে এনে মারধর করা হচ্ছিল ওই স্যরকে। হাতে লাঠি নিয়ে মাটিতে ফেলে মারছিল। পরিস্থিতি বাজে দিকে যাচ্ছে দেখে ১০৮ শিবমন্দিরের কাছে থাকা যুবকদের ডেকে নিয়ে আসি।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই ব্যক্তিকে থামানো যাচ্ছে না দেখে ওই যুবকেরা বালতি করে জল ঢেলে তাঁকে শান্ত করেন। পরে তাঁকে গ্রামে নিয়ে গিয়ে মারধরও করা হয়, বলে অভিযোগ। ওই শিক্ষককে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন ওই যুবকেরাই। জানা গিয়েছে, শিক্ষকের হাতে চোট লেগেছে। এর পরেই স্কুলের পাশে দাঁড়ান গ্রামবাসীরা। রীনাদেবীর কাছে পুরো ঘটনার জন্যে ক্ষমা চাওয়া হয়। গ্রামের অনেকেরই দাবি, ওই অভিভাবকের জন্য গ্রামের বদনাম হয়ে গেল।
অভিযুক্ত অভিভাবক বলেন, “পাঁচ বছরের ছেলের গালে চড় মারার দাগ দেখে মাথা ঠিক রাখতে পারিনি। খুব অন্যায় করে ফেলেছি। এ রকম করা আমার উচিত হয়নি।’’ জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) নারায়ণচন্দ্র পাল বলেন, “ঘটনার কথা শুনেছি। গ্রামবাসীরাই দোষীকে চিহ্নিত করেছেন। তাঁরা শিক্ষকদের ও স্কুলে পাশে রয়েছেন। আবার অভিযুক্ত অভিভাবকও ক্ষমা চেয়েছেন। সে জন্য আইনের পথে হাঁটছি না।’’