সাহায্য: কাঁকসার রাস্তায় জল এগিয়ে দিচ্ছেন মহিলা। নিজস্ব চিত্র
গরম পড়তেই বিভিন্ন জায়গায় পথচারীদের জন্য ব্যবস্থা হয় জলসত্রের। কোথাও কোনও ক্লাব, কোথাও ব্যবসায়ীদের সংগঠন, আবার কোথাও গ্রামবাসীরাই রাস্তায় জল, সরবত খাওয়ানোর বন্দোবস্ত করেন। এ বার প্রখর গরমের মধ্যে পানাগড়-দুবরাজপুর রাজ্য সড়কের মাজুড়িয়া বাসস্টপেও এমনই একটি জলসত্রের ব্যবস্থা হয়েছে। তবে কোনও সংগঠন নয়, পুরো গরমকাল পথচারীদের তৃষ্ণা মেটানোর ব্যবস্থা করেছেন এক মহিলা।
প্রতিদিন সকাল থেকেই বাসস্টপের কাছে বসে পড়ছেন মাজুড়িয়া গ্রামের জবা চক্রবর্তী। বিকেল পর্যন্ত গুড়, বাতাসা, জল দিচ্ছেন পথচারীদের। গত বছর গ্রীষ্ম থেকেই জলসত্রের ব্যবস্থা করছেন তিনি। জবাদেবী জানান, গত বছর গরমের সময় বাসে করে যাওয়ার সময়ে তিনি লক্ষ করেন, যাত্রী থেকে চালক-খালাসি, সকলেই হাঁসফাঁস করছেন। মোড়ে-মোড়ে দাঁড়িয়ে পানীয় জল চাইছেন। তার পরেই তিনি সিদ্ধান্ত নেন, নিজের এলাকায় একটি জলসত্র খুলবেন।
সারা দিন একার পক্ষে পথচারীদের জল দেওয়া সম্ভব নয়। তাই সঙ্গে নিয়েছেন গ্রামের যুবক বাবু বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সকাল থেকেই তাঁরা দু’জনে সাইকেল আরোহী থেকে গাড়ির চালক, সকলকে দাঁড় করিয়ে তৃষ্ণা মেটান। জবাদেবী জানান, অনেক ফেরিওয়ালা গরমে সারা দিন ঘুরে জিনিস বিক্রি করে ক্লান্ত হয়ে পড়েন। তাঁদের তৃষ্ণা মেটে এখানে। জবাদেবীর স্বামী মিহির চক্রবর্তী পেশায় ঠিকাদার। তিনি বলেন, ‘‘বিভিন্ন মোড়ে আগে জলসত্র দেখতাম। আমার স্ত্রী সেই ব্যবস্থা করায় গর্বিত।’’
শনিবার মোটরবাইকে চ়়ড়ে বোলপুর থেকে আসা আরোহী গৌতম মণ্ডল জবাদেবীর কাছে জল-বাতাসা খেতে-খেতে বলেন, ‘‘তেষ্টা পেয়েছিল, খুব কষ্ট হচ্ছিল। এখানে জলসত্র পেয়ে ভাল লাগছে।’’ মাজুড়িয়া বাসস্টপের ব্যবসায়ী জয়দেব দে, বাবু মজুমদারেরা বলেন, ‘‘আমাদের গ্রামের মহিলার গরমে পথচারীদের পিপাসা মেটাচ্ছেন, এটা গর্বের বিষয়। আমরাও পাশে থাকার চেষ্টা করছি।’’