বাসের ভিতর জুড়ে সারি দিয়ে বাঁধা গরু। — নিজস্ব চিত্র।
দিনের ব্যস্ত সময়ে মেমারির মগরা জি টি রোড ধরে দ্রুত গতিতে ছুটে চলেছে একটি ঝাঁ চকচকে ভলভো বাস। যার প্রতিটি জানালা রঙিন পর্দায় ঢাকা। পূর্ব বর্ধমানের মেমারি চকদিঘি মোড় এলাকায় আচমকা ছন্দপতন। বাসের পিছন দিক থেকে হঠাৎ করে কী একটা যেন রাস্তায় পড়ে গেল। তা দেখে স্থানীয়েরা অবাক। তাঁরা দেখেন, বাস থেকে একটি গরু পড়ে গিয়েছে রাস্তায়। বাসটির কাছে যেতেই একসঙ্গে অনেক গরুর চিৎকার শুনতে পান তাঁরা। বাসের ভিতর থেকেই গরুর আওয়াজ! সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। তারা বাস আটকান। বাসের দরজা খুলে ভিতরে ঢুকতেই চক্ষু ছানাবড়া হওয়ার উপক্রম! কোথাও কোনও যাত্রী নেই! বাসের ভিতর জুড়ে সারি দিয়ে বাঁধা গরু। এমনকি, যাত্রীদের বসার জন্য নেই কোনও আসনও। স্থানীয়দের প্রশ্ন, তা হলে কি ভলভো বাসের আড়ালে আবার নতুন করে সক্রিয় হয়ে উঠেছে গরুপাচার চক্র। হঠাৎ করে বাসে করে এ ভাবে গরু নিয়ে যেতে হচ্ছে কেন? পুলিশ ও স্থানীয়দের চোখে ধুলো দিতেই কি এমন ব্যবস্থা?
বাসচালক রাজুর দাবি, বাসের ভিতরে যে ক’টি গরু ছিল সেগুলির কাগজপত্র রয়েছে। কোনওটিই চোরাই গরু নয়। তাঁর আরও দাবি, বিহার থেকে হুগলির পাণ্ডুয়ায় গরুগুলিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। যদিও বাসের হেল্পার জানান, আসানসোল থেকে পাণ্ডুয়া নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল প্রাণীগুলিকে। এ বিষয়ে স্থানীয়দের তরফে পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি বলেই জানা গিয়েছে।
গত ফেব্রুয়ারিতেই গরু চুরি করে পাচার করা হচ্ছে, এই সন্দেহে আসানসোলের ডাঙমহীশিলা এলাকায় একটি ম্যাটাডর খালি করিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গাড়িচালক ও খালাসিকে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। ওই গাড়িতে ৯টি গরু ছিল। এলাকাবাসীর একাংশ অভিযোগ তোলেন, গরুগুলি এলাকা থেকে চুরি করে পাচার করা হচ্ছিল। গত বছর ডিসেম্বরে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লকের তুরুক-ময়না গ্রামে গরু চুরির চেষ্টার অভিযোগে গণপ্রহারের ফলে দু’জনের মৃত্যু হয়।