মায়ের সঙ্গে সুরজিৎ। নিজস্ব চিত্র
কয়েক মাস আগে দোকান বন্ধ করে দিতে হয়েছে। দিনমজুরি করে চলে সংসার। তার মধ্যেই ছ’বছরের ছেলের দু’টি কিডনি খারাপ। গলসি ১ ব্লকের রামগোপালপুরের রুজ পরিবারের দাবি, ডাক্তারেরা জানিয়েছেন দ্রুত কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হবে। টাকা জোগাড়ের চিন্তাতেই ঘুম উড়েছে তাঁদের।
ওই শিশুর বাবা সুব্রত রুজ জানান, এ বছর দোলের দিন আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়ে ছেলে সুরজিৎ। জ্বরের উপসর্গ নিয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের বহির্বিভাগে ছেলেকে দেখান তাঁরা। ভর্তি করানো হয়। ধরা পড়ে, সুরজিতের দুটি কিডনিই খারাপ। ছেলেকে নিয়ে কলকাতার এসএসকেএমে যান ওই দম্পতি। সেখানেই একই কথা জানান ডাক্তারেরা। সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘ঘটি, বাটি বিক্রি করে ছেলেকে দক্ষিণ ভারত নিয়ে গিয়েছিলাম। সেখানকার ডাক্তারেরাও বললেন, কিডনি প্রতিস্থাপন ছাড়া উপায় নেই।’’ তার পর থেকে সাহায্যের আশায় ঘুরছেন তাঁরা।
সুরজিতের মা তনুশ্রীদেবীর দাবি, ওষুধপত্র, পরীক্ষা করাতে লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। প্রতিবেশী, পরিজনেদের সাহায্যে চিকিৎসা চলছে ছেলের। সপ্তাহে দু-তিন দিন ডায়ালিসিস করাতে হয়। সে টাকা জোগাতেই কুল পাচ্ছেন না তাঁরা। ছেলেকে বাঁচাতে নিজেদের কিডনি দিতে চেয়েছিলেন সুব্রতবাবু ও তনুশ্রীদেবী। সুব্রতবাবুর মা, কাকাও এগিয়ে এসেছিলেন নাতিকে জীবন দিতে। কিন্তু পরীক্ষা করে দেখা যায়, কারও কিডনিই নিতে পারবে না সুরজিৎ।
স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ফজিলা বেগম বলেন, ‘‘আমি নিজের উদ্যোগে পরিবারটিকে কিছু আর্থিক সাহায্য করেছি। প্রয়োজনে আরও করা হবে। কিন্তু প্রয়োজনীয় কিডনি পাই কোথায়!’’ গলসির বিধায়ক অলোককুমার মাজির কাছেও সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন ওই দম্পতি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাহায্য পেতে ‘দিদিকে বলো’ মোবাইল নম্বরেও একাধিক বার চেষ্টা চালিয়েছেন। কিন্তু ফোন পাওয়া যায়নি।
তনুশ্রীদেবী বলেন, ‘‘ছেলের কষ্ট আর সহ্য হচ্ছে না। জানি না কী হবে। মুখ্যমন্ত্রীই এখন আমাদের ভরসা।’’ বিধায়ক বলেন, ‘‘ওই পরিবারের পাশে রয়েছি। প্রয়োজনীয় সব রকম সাহায্য করা হবে।’’