ঘরে ফিরছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। ফাইল চিত্র।
অনেক দিন আগেই শেষ হয়েছে ‘কোয়রান্টিন-পর্ব’। কিন্তু তার পরেও অনেকেই আটকে ছিলেন দুর্গাপুরের ‘কোয়রান্টিন কেন্দ্র’-এ। সোমবার রাতে তেমনই এক যুবক নিখোঁজ হয়ে যান। পরে তাঁর সন্ধান মেলে। ইতিমধ্যে ভিন্ রাজ্য ও ভিন্ জেলার এমন আটকে থাকা বাসিন্দাদের বাড়ি পাঠাতে উদ্যোগী হল প্রশাসন। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট জানায়, বুধবার ঝাড়খণ্ডের ওই যুবক-সহ ৯০ জনকে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।
দুর্গাপুরের ডিএসপি টাউনশিপের ইঞ্জিনিয়ার্স হস্টেলে ‘কোয়রান্টিন’-এ থাকা ঝাড়খণ্ডের এক যুবক সোমবার রাতে আচমকা নিখোঁজ হন। দুর্গাপুর থানার পুলিশ রাতভর তল্লাশি চালিয়ে মঙ্গলবার সকালে অণ্ডালে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাক থেকে তাঁকে উদ্ধার করে ফের ‘কোয়রান্টিন কেন্দ্র’-এ ফেরত পাঠানো হয়। পুলিশের একটি সূত্র থেকে জানা যায়, এক মাসেরও বেশি সময় কোয়েরান্টিন কেন্দ্রে আটকে থাকতে থাকতে ওই যুবক মানসিক ভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। তাই তিনি কোনও রকমে সবার নজর এড়িয়ে পালান।
কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্ত বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘বুধবার যে ৯০ জনকে বাড়ি পাঠানো হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ঝাড়খণ্ডের এগারো জন ছিলেন।’’ পুলিশ সূত্রের দাবি, ঝাড়খণ্ডের ১১ জনের যে দলটিকে বাড়ি পাঠানো হয় সেই দলে ওই যুবকও রয়েছেন। মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) অনির্বাণ কোলে এ দিন বলেন, ‘‘আর ছ’জন বাকি রইলেন। দ্রুত তাঁদেরও ফেরানোর ব্যবস্থা করা হবে।’’ ওই বাসিন্দারা বাড়ির উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে তাঁদের ফুল, জলের বোতল ও মিষ্টি দিয়ে শুভেচ্ছা জানান অফিসার ইনচার্জ (দুর্গাপুর থানা) রাজশেখর মুখোপাধ্যায় ও অন্য পুলিশকর্মীরা।
মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরের বিভিন্ন ‘কোয়রান্টিন কেন্দ্র’-এ তিনশোরও বেশি অন্য ভিন্ জেলা ও ভিন্ রাজ্যের বাসিন্দারা ছিলেন। ‘লকডাউন’ শুরু থেকে তাঁরা ছিলেন শহরের বিভিন্ন ‘কোয়রান্টিন’ কেন্দ্রে। প্রশাসন তাঁদের দেখভাল ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। কিন্তু ১৪ দিনের ‘কোয়রান্টিন’-পর্ব পেরনোর পরেও, লকডাউনের কড়াকড়ির জন্য তাঁদের ফেরত পাঠাতে সে ভাবে পদক্ষেপ নজরে পড়েনি। তবে এই মুহূর্তে ‘লকডাউন’ শিথিল হওয়ায় ধাপে ধাপে তাঁদের ফের পাঠানো হচ্ছে।
পূর্ব বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, হুগলি প্রভৃতি জেলার বাসিন্দাদের ধাপে ধাপে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার (এসবিএসটিসি) বাসে করে বাড়ি পাঠানো হয়। কেউ তিন সপ্তাহ, কেউ চার সপ্তাহ কাটিয়ে বাড়ি ফিরতে পেরেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঝাড়খণ্ডের সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কী ভাবে তাঁদের সেখানে পাঠানো হবে তা চূড়ান্ত করা হয়। বাড়ি পাঠানোর আগে প্রত্যেকেরই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়। প্রশাসনের দাবি, সবাই সুস্থ।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)