এই মামলার আইনজীবীদের মতে, বিচারকের এই রায় কার্যত নজিরবিহীন। প্রতীকী ছবি।
ছ’মাসের শিশুকন্যাকে যৌন নির্যাতনের দায়ে এক প্রৌঢ়কে আমৃত্যু কারাবাসের সাজা দিল পূর্ব বর্ধমানের কালনার জেলা ও দায়রা আদালত। ওই শিশুর প্রতিবেশী তথা এই মামলায় অভিযুক্ত প্রৌঢ়কে দোষী সাব্যস্ত করে কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৩০ হাজার টাকা জরিমানাও করেছেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক সুধীর কুমার। তাঁর নির্দেশ, ক্ষতিপূরণ বাবদ জরিমানার টাকা নির্যাতিতা শিশুর মাকে দিতে হবে।
এই মামলার আইনজীবীদের মতে, বিচারকের এই রায় কার্যত নজিরবিহীন। যৌন নির্যাতনে দোষী বদ্রীনাথ মাণ্ডি ওরফে বৈদ্যনাথের এমন দৃষ্টান্তমূলক সাজা দেওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই আনন্দিত নির্যাতিতার পরিবার।
কালনা আদালতের সরকারি আইনজীবী মলয় পাঁজা বলেন, ‘‘২০১৯ সালের ৩০ জুলাই কালনার নান্দাই পঞ্চায়েত এলাকায় বাগানেপাড়ায় এক শিশুকে যৌন নির্যাতন করেছিলেন বলে অভিযোগ বদ্রীনাথের বিরুদ্ধে। ওই দিন সকালে ছ’মাসের মেয়েকে ঘরে রেখে পুকুরঘাটে বাসন মাজতে যান তার মা। সে সময় বাড়িতে আর কেউ ছিলেন না। অভিযোগ, সেই সুযোগে ফাঁকা বাড়িতে ঢুকে ওই শিশুটির উপর যৌন নির্যাতন চালান বদ্রীনাথ। বাসন মেজে ঘরে ফিরে তাঁকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পান শিশুকন্যার মা। তিনি চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করলে বদ্রীনাথকে ধরে ফেলেন স্থানীয়েরা। খবর পেয়ে কালনা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে বদ্রীনাথকে পুলিশের হাতে তুলে দেন তাঁরা।’’
পুলিশ সূত্রে খবর, শিশুকন্যাকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে বদ্রীনাথের বিরুদ্ধে কালনা থানায় অভিযোগ দায়ের করে শিশুটির পরিবার। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পকসো আইনে মামলা রুজু করে প্রৌঢ়কে গ্রেফতার করে কালনা থানার পুলিশ। তদন্তের শেষে পুলিশ আদালতে চার্জশিট জমা দেয়। তার ভিত্তিতে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল।
এই মামলায় তদন্তকারী পুলিশ অফিসার, চিকিৎসক-সহ ১৫ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। সোমবার বদ্রীনাথকে দোষী সাব্যস্ত করে আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা দেন বিচারক।