West Bengal Panchayat Election 2023

জিতেই ঘাসফুলে যোগ চার বিরোধীর

বাগনাগরা গ্রামে চন্দনা মণ্ডলকে তৃণমূল প্রার্থী করায় একটা বড় অংশের মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে যান। তৃণমূল প্রার্থীকে হারানোর জন্য ওই গ্রামেরই তনুশ্রী মণ্ডলকে নির্দলে দাঁড় করানো হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাটোয়া শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৩ ০৮:৪৮
Share:

কাটোয়ায় তৃণমূল কার্যালয়ে ওই চার জন। —নিজস্ব চিত্র।

ভোট-পর্ব জুড়ে প্রকৃত উন্নয়ন চাইলে তৃণমূলের বদলে সিপিএমকে বেছে নেওয়ার আবেদন করতে দেখা গিয়েছে তাঁদের। দুর্নীতি, কাটমানি, অন্তর্দ্বন্দ্ব নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। কিন্তু জেতার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অবস্থান বদলে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন ওই চার জন।

Advertisement

কাটোয়া ১ ব্লকের শ্রীখণ্ড পঞ্চায়েতের গাঙ্গুলিডাঙার তিন সিপিএম প্রার্থী ইউসুফ শেখ, মনোতারা বিবি, কদরবানু বিবি ও বাগনাগরা গ্রামের এক নির্দল প্রার্থী তনুশ্রী মণ্ডল বুধবার কাটোয়া শহরের স্টেশনবাজারে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে জেলা সভাপতি তথা কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে যোগদানের ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। রবীন্দ্রনাথবাবু তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন। ওই চার জনের দাবি, উন্নয়নের স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। সিপিএম অবশ্য পুরো বিষয়টিকে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস বলে অভিযোগ করেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাগনাগরা গ্রামে চন্দনা মণ্ডলকে তৃণমূল প্রার্থী করায় একটা বড় অংশের মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে যান। তৃণমূল প্রার্থীকে হারানোর জন্য ওই গ্রামেরই তনুশ্রী মণ্ডলকে নির্দলে দাঁড় করানো হয়। তাঁর সমর্থনে তৃণমূল কর্মীদেরও একাংশ গ্রামে প্রচার করেন। তৃণমূলের বাইক বাহিনী তাঁর বাড়ি গিয়ে হুমকি দেয় বলে অভিযোগও করেন তনুশ্রী। পরে দেখা যায় ১৯ নম্বর বুথে তৃণমূলকে হারিয়ে ২৪৬ ভোটে জয়ী হয়েছেন তিনি। গাঙ্গুলিডাঙা গ্রামেও সিপিএম প্রার্থী ইউসুফ শেখ ২১১ ভোটে, মনোতারা বিবি ১৯৮ ও কদরবানু বিবি ৪১৫ ভোটে জয়ী হন। সিপিএমের অভিযোগ ছিল, গণনার দিন কেন্দ্রে ঢোকার আগেই তাঁদের মারধর করা হয়। সেই কারণেই তৃণমূলে যোগ দিতে বাধ্য হন তাঁরা। এ দিন ওই চার জন বলেন, ‘‘গ্রামে তৃণমূলের প্রার্থীদের অনেকেই পছন্দ করতেন না। সেই কারণে সিপিএম ও নির্দলে ভোটে দাঁড়িয়ে মানুষের আর্শীবাদে জিতেছি।’’ এর পরেই তাঁদের সংযোজন, ‘‘চারিদিকে তৃণমূলের জয়জয়কার। আমাদের পঞ্চায়েতও তৃণমূল পেয়েছে। গ্রামের সার্বিক উন্নয়ন ও শান্তির জন্যই আমরা স্বেচ্ছায় তৃণমূলে যোগ দিয়েছি।’’

Advertisement

কাটোয়ার সিপিএম নেতা অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘প্রথম থেকেই আমাদের প্রার্থীদের উপরে তৃণমূল চাপ দিচ্ছিল। গণনাকেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। তবুও ওঁরা জিতেছেন। আসলে প্রাণে মারার ভয় দেখিয়ে আমাদের তিন জয়ী প্রার্থীকে তৃণমূল দলে যোগদান করিয়েছে।’’ যদিও জেলা তৃণমূল সভাপতির দাবি, ‘‘আমরা কাউকে জোর করিনি। বরং গণনাকেন্দ্র থেকে সিপিএম ওঁদের ডেকে মিথ্যা ঘটনা সাজানোর চেষ্টা করেছিল। বাগনাগরা গ্রামের জয়ী নির্দল প্রার্থী কোনও দিনই সরাসরি কোনও দল করেনি। প্রত্যেকেই উন্নয়নের স্বার্থে আমাদের দলে যোগদান করার আবেদন জানান। আমরা তাঁদের গ্রহণ করেছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement