প্রতীকী ছবি
শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে পূর্ব বর্ধমানে দলের এক শ্রমিক নেতা, এক পঞ্চায়েত প্রধান ও এক যুব নেতাকে শো-কজ় করার নির্দেশ দিয়েছিল তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি। শনিবার জেলা আইএনটিটিইউসি-র সভাপতি ইফতিকার আহমেদ ওরফে পাপ্পুকে শো-কজ়ের চিঠি দেওয়া হল দলের তরফে। এ দিন বিকেলে তিনি সেই শো-কজ়ের জবাবও দিয়েছেন বলে জানান ইফতিকার। এ ছাড়া কেতুগ্রামের আনখোনা পঞ্চায়েতের প্রধান আয়েষা খাতুন ও কেতুগ্রাম ২ ব্লক যুব সভাপতি গৌরাঙ্গ ঘোষকেও শো-কজ় করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জেলা তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে।
শনিবার বর্ধমানে দলে এক সভায় তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘‘উপযুক্ত প্রমাণ পেলে নিচু থেকে উঁচু, কোনও স্তরের নেতা-কর্মীকে রেয়াত করবে না দল। সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।’’ তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকালে জেলা পরিষদের সহ-সভাপতি তথা দলের কো-অর্ডিনেটর দেবু টুডু ওই শ্রমিক নেতাকে শো-কজ়ের চিঠি দেন। দেবুবাবু বলেন, ‘‘দল কঠোর অনুশাসনের দিকে এগোচ্ছে। তার প্রথম ধাপে রাজ্যের ৬৩ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। আমাদের জেলায় শ্রমিক নেতা-সহ কেতুগ্রামের এক প্রধান ও যুব নেতাকে শো-কজ় করতে বলেছে দল। কেতুগ্রামের বিষয়টি সেখানকার পর্যবেক্ষক দেখবেন।’’ কেতুগ্রামে দলের পর্যবেক্ষক তথা বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল জানান, আনখোনার প্রধান আয়েষা খাতুনের বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নিয়েছে।
ওই শ্রমিক নেতার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ উঠেছিল? তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, ‘লকডাউন’-এর সময় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বর্ধমান স্টেশন চত্বরে খাবার বিলি করছিল। তাদের মারধরের অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনার খবর দলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পৌঁছয়। সে সংক্রান্ত রিপোর্ট নিয়ে বৃহস্পতিবার জেলার নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে দলের রাজ্য স্তরের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি। এর পরেই শ্রমিক নেতাকে শো-কজ়ের চিঠি দিতে নির্দেশ দেওয়া হয় দেবুবাবুকে।
এ দিন বিকেলে শ্রমিক নেতা ইফতিকার শুধু বলেন, ‘‘শনিবার সকালে চিঠি পেয়েছি। বিকেলের মধ্যে জবাবও দিয়েছি।’’ দেবুবাবু জানান, জবাবের চিঠি শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তারা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ ছাড়াও কেতুগ্রামের আনখোনা পঞ্চায়েতের প্রধান আয়েষা ও কেতুগ্রাম ২ ব্লক যুব সভাপতি গৌরাঙ্গকে শো-কজ় করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আনখোনায় সম্প্রতি রেশন দোকানে গোলমাল হয়। এ ছাড়া আবাস যোজনা ও একশো দিন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। আয়েষা শুধু বলেন, ‘‘চিঠি পাইনি। দলের চিঠি পেলে যা বলার বলব।’’ যুব নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সংগঠনের শীর্ষ স্তরে পাঁচ দফা রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছিল। তিনি তা পাঠাননি। কেতুগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজ বলেন, ‘‘গৌরাঙ্গের সঙ্গে আমি কথা বলছি। কেন ওঁকে শো-কজ় করার কথা উঠছে তা-ও খোঁজ নিচ্ছি।’’