ফাইল চিত্র।
জেলায় নতুন কোনও বড় কারখানা তৈরি হয়নি প্রায় এক দশক। তবে অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পক্ষেত্রে, বিশেষ করে অনুসারী শিল্পে কিছুটা হলেও আশা দেখা যাচ্ছে বলে মনে করছে জেলার বণিক সংগঠনগুলি। কিন্তু পরিকাঠামোগত এবং জমির সমস্যা পশ্চিম বর্ধমানে শিল্প স্থাপনে প্রধান বাধা বলে তাদের মত।
কেন ‘আশা’ দেখছে বণিক সংগঠনগুলি? অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বস্ত্র শিল্প দফতরের পশ্চিম বর্ধমান জেলার ডেপুটি ডিরেক্টর শুভেন্দু বিশ্বাস দাবি করেছেন, ২০১৮-১৯ এবং ২০১৯-২০, এই দু’টি অর্থবর্ষে এই শিল্পক্ষেত্রে দু’শো কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এর ফলে, জেলায় মোট একশোটি কারখানা চালু হবে। এর বেশির ভাগই হবে রানিগঞ্জে কুনস্তরিয়ায় নির্মীয়মাণ নতুন শিল্পতালুকে। কিছু কারখানা হবে দুর্গাপুর, অণ্ডাল-সহ কয়েকটি জায়গায়। এ ছাড়া, শ’খানেক কারখানা চালুর প্রস্তাবও জমা পড়েছে বলে দাবি শুভেন্দুবাবুর।
এই পরিস্থিতিতে ‘রানিগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সে’র সভাপতি সন্দীপ ভালোটিয়া জানান, জেলায় ইস্পাত নির্ভর অনুসারী শিল্পে বিনিয়োগে সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে সরকারের আরও উৎসাহ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি। ওই বণিক সংগঠনটির মতে, সরকারকে কয়লার বদলে জ্বালানি হিসেবে পর্যাপ্ত গ্যাসের জোগান নিশ্চিত করতে হবে। তবে নতুন শিল্প স্থাপনের জন্য কুনস্তরিয়ায় পরিকাঠামোগত আরও উন্নয়ন জরুরি বলে দাবি সন্দীপবাবুর।
কিন্তু বড় শিল্প কেন তৈরি হচ্ছে না জেলায়, সে প্রশ্নটিও উঠেছে। ‘সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্টিজ়’-এর সাধারণ সম্পাদক সুব্রত দত্তের মতে, এই জেলায় এখনও পর্যন্ত সরকার ‘জমি ব্যাঙ্ক’ সে ভাবে তৈরি করতে পারেনি। তা ছাড়া, নানা শংসাপত্র পেতে দেরি, জমির চরিত্র রূপান্তরের জন্য অতিরিক্ত খরচ, ভূগর্ভে কয়লা থাকায় কারখানা চালুর অনুমতি না মেলা-সহ বেশ কয়েকটি বিষয়কে বড় শিল্প স্থাপনের প্রতিবন্ধকতা বলে দাবি করেছে সংগঠনটি।
যদিও প্রশাসনের তরফে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার কথা জানানো হয়েছে। জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, “কুনস্তরিয়ায় পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করা হবে। জমি সংক্রান্ত সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’’ পাশাপাশি, শুভেন্দুবাবু জানান, ইস্পাত শিল্পকে কেন্দ্র করে জেলা জুড়ে প্রায় একশোটি অনুসারী শিল্প কারখানা চলছে। এই সংখ্যাটি যাতে আরও বাড়ে, সে জন্য বণিক সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনা চলছে। পাশাপাশি, তাঁর দাবি, ‘‘খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের জন্য পর্যাপ্ত কাঁচামালের জন্য পশ্চিম বর্ধমানকে লাগোয়া জেলাগুলির দিতে তাকিয়ে থাকতে হয়। তার পরেও, এ ক্ষেত্রে বিনিয়োগে আগ্রহী কয়েকজন শিল্পোদ্যোগী। তাই সব সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় প্রচার ও সমীক্ষাও করা হচ্ছে।’’