দুর্গাপুরে উদ্ধার হওয়া নিষিদ্ধ সিরাপ। —নিজস্ব চিত্র।
পর পর দু’দিনে নিষিদ্ধ সিরাপের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে জোড়া সাফল্য পেল রাজ্য পুলিশের এসটিএফ। দু’টি অভিযানই দুর্গাপুরে চালানো হয়। গোয়েন্দাদের সূত্রে জানা গিয়েছে, আপেল ও চিনামাটির বাসনের আড়ালে চলছিল এই পাচার। দু’জনকে গ্রেফতার ও এক জনকে আটক করা হয়েছে।
এসটিএফের পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু সোমবার বলেন, “রাজ্য জুড়েই মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। তাতেই সাফল্য এসেছে দুর্গাপুরে।” এসটিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, খবর আসছিল যে, ফল বা অন্য কিছুর আড়ালে মাদক পাচার চলছে। সেই মতো রবিবার আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের নিউ টাউনশিপ থানা এলাকার দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের সার্ভিস রোডে, এবিএল মোড়ের কাছে একটি ট্রাক আটক করা হয়। দেখা যায়, ট্রাকটিতে করে আপেল নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তল্লাশি চালিয়ে দেখা যায়, ২৫টি ভাগে থরে-থরে রাখা আপেলের বাক্স। গোয়েন্দারা জানান, তল্লাশি চালিয়ে পাঁচ হাজার বোতল নিষিদ্ধ মাদক মেশানো সিরাপ উদ্ধার মেলে। এর বাজার মূল্য আনুমানিক প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা। ট্রাকে থাকা দুর্ভেশ কুমার ও কানহাইয়া কুমার নামে উত্তরপ্রদেশের হাথরসের বাসিন্দা দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে নিউ টাউনশিপ থানায় মাদক আইনে মামলা দায়ের করেছে এসটিএফ।
পুলিশ জানাচ্ছে, ওই মাদক মিশ্রিত সিরাপ এই রাজ্যে নিষিদ্ধ। কিন্তু ভিন্-রাজ্যে এটির উৎপাদনে বাধা নেই। হিমাচলপ্রদেশে ওই সংস্থার কারখানা রয়েছে। সেখান থেকে সিরাপ এই রাজ্য হয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বাংলাদেশে। এক গোয়েন্দা আধিকারিক জানাচ্ছেন, সিরাপের বোতলগুলি দুর্গাপুর হয়ে মুর্শিদাবাদে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। সেখান থেকে তা বাংলাদেশে পাঠানোর পরিকল্পনা ছিল বলে অনুমান। ওই আধিকারিকই জানাচ্ছেন, সীমান্ত পারাপারের সময়ে, এক সঙ্গে এতগুলি বোতল বাংলাদেশে পাঠানো হয় না। একশোটি বা দু’শোটি করে বোতল রাতের অন্ধকারে পাঠানো হয়।
ঘটনার পরে, সোমবারই ফের দুর্গাপুরের গান্ধী মোড়ে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কে অভিযান চালিয়ে রাজস্থান থেকে আসা একটি ট্রাক আটক করে এসটিএফ। দুর্গাপুর থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, পথের মাঝে উত্তরপ্রদেশ থেকে নিষিদ্ধ সিরাপের বোতল তোলা হয় ট্রাকে। বিশেষ সূত্রে খবর পেয়ে, গান্ধী মোড়ের কাছে ট্রাকটি আটক করা হয়। দেখা যায়, চিনামাটির বাসনপত্রের আড়ালে সাজানো প্রায় ১৫ হাজার নিষিদ্ধ সিরাপের বোতল। এর আনুমানিক মূল্য কয়েক লক্ষ টাকা। ট্রাকের চালককে আটক করেছে পুলিশ। এর নেপথ্যে কোন চক্র কাজ করছে, সে বিষয়ে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।