আবার চড়ছে টম্যাটোর দাম। —নিজস্ব চিত্র।
একটু পড়ছিল দাম। কিন্তু পুজোর আবহে আবার মারকাটারি মেজাজে টোম্যাটো। কেজি প্রতি দাম এখন একশোর পথে। কালীপুজোর দিন, রবিবার শুধু টম্যাটোই নয় অন্যান্য সব্জির দাম উঠল চরমে। টোম্যাটোর দোসর পেঁয়াজের ঝাঁজে নয়, দাম শুনে চোখে জল পড়ছে বাজারে বেরনো মধ্যবিত্তের।
এমনিতেই বাজারের ঠেলায় সাধারণ মধ্যবিত্তের প্রাণ যায় যায়। দুর্গাপুজোর পর লক্ষ্মীপুজো। এ বার কালীপুজো। ক্রিকেট বিশ্বকাপের মতই পুজো রাউন্ডে রবিন টুর্নামেন্ট চলছে। ঝোপ বুঝে কোপ মারছেন একদল অসাধু ব্যবসায়ীরাও। গত দু’ দিন চড়চড়িয়ে দাম বেড়েছে পেঁয়াজ থেকে কপি, শাক থেকে টোম্যাটোর। শনিবার যে ফুলকপির প্রতিটির দাম ছিল ২০ টাকা, রবিবার তার দামই শোনা গেল ৫০ টাকা! রসুন এখন ২০০ টাকা কেজি, পটলের দাম প্রতি কেজি ৬০ টাকা। আর পেঁয়াজ ছিল ৬০, এখন প্রতি কেজি ৭০ টাকা।
গত অগস্ট মাসে অগ্নিমূল্য হয়েছিল টোম্যাটো। দেশে সব চেয়ে বেশি টোম্যাটো উৎপন্ন হয় অন্ধ্রপ্রদেশে, কর্নাটক এবং মহারাষ্ট্রে। এই রাজ্যগুলো থেকে অধিকাংশ টোম্যাটো বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয়। কিন্তু এখন তো শীতের ‘আসি-আসি’ সময়! সাধারণত এই সময়ে বাজারে শাক-সব্জির দাম কমতে শুরু করে। কিন্তু এ বছরই যেন বাজারের চরিত্র আলাদা। উল্টো পথে হাঁটছে সব হিসাব। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে আমদানির উপর দাম নির্ভর করে। টোম্যাটো-সহ সব সব্জির আমদানি এ বার বেশ কম। তাতেই দাম বেড়েছে। খুচরো ব্যবসায়ী উত্তম দত্তের কথায়, ‘‘বাজারে টোম্যাটো, পেঁয়াজ-সহ সব সব্জির দাম বেড়েছে। এতে যেমন ক্রেতার সমস্যা হচ্ছে, তেমনই আমাদেরও ব্যবসা মন্দা যাচ্ছে। বাজারে বিক্রি একেবারে কমে গেছে।’’ বাজার করতে বেরনো শ্যামল দে নামে এক প্রৌঢ়ের কথায়, ‘‘বাজার যেতেই তো ভয় করছে! বেগুনের দাম ছিল ৩০ টাকা কেজি। সে এখন হাফ সেঞ্চুরির দোরগোড়ায়। কি করে সংসার চলবে!’’
বর্ধমানের নীলপুর থেকে স্টেশন বাজার কিংবা বীরহাটা বাজার— সব জায়গাতেই দাম প্রায় সমান। দাম বেড়েছে অথচ সরকারের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। অভিযোগ, আগে টাস্ক ফোর্সের লোকজন বাজারে ঘুরতেন। কিন্তু এখন ওসবের বালাই নেই বলে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন ক্রেতারা।