সাম্যকুমার রায়
বাড়ি থেকে যাওয়ার সময়ে কিছু আপেল সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন। চিনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে পৌঁছনোর পরে কিনেছিলেন কিছু নুডল্স। উহানের ভাড়াবাড়িতে আপাতত সেগুলিই ভরসা গণিতের গবেষক সাম্যকুমার রায়ের। করোনা ভাইরাসের হানার জেরে বাইরে বেরনো বন্ধ। ‘আতঙ্ক’ এলাকায়। এ ভাবে আর কত দিন কাটবে, তা নিয়েই চিন্তায় পড়েছেন বছর আঠাশের ওই যুবক। দ্রুত দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হোক ছেলেকে, বর্ধমানের বাড়িতে বসে আর্জি জানাচ্ছেন তাঁর বাবা-মা।
কানপুর আইআইটি-র গণিতের প্রাক্তনী সাম্য চিনের উহান বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘পোস্ট-ডক্টরাল থিসিস’ করতে গিয়েছেন গত ফেব্রুয়ারিতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ভাড়াবাড়িতে থাকেন। সম্প্রতি ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন। বুধবার উহানে ফিরে যান। আর সেখানে পৌঁছনোর পর থেকেই ঘরবন্দি হয়ে রয়েছেন।
সোমবার ফোনে সাম্য দাবি করেন, উহান শহরে এখন ‘ভয়াবহ’ পরিস্থিতি। ‘‘রাস্তা সুনসান। গাড়ি চলছে না। সব দোকান বন্ধ। আতঙ্ক এতটাই ছড়িয়েছে যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ক্যান্টিন খোলা থাকলেও কেউ যাচ্ছেন না!’’
আরও পড়ুন: সংশোধনে ভিড় সামাল দিতে বাড়তি আধার কেন্দ্র
সাম্য জানান, ভারতীয় দূতাবাস থেকে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘তবে এখনই দেশে ফিরতে পারব কি না, বা কী ভাবে ফেরা যাবে বুঝতে পারছি না।’’
চিন্তায় পড়েছেন সাম্যর বাবা সুজিতবাবু ও মা ইনাদেবীও। সুজিতবাবু বলেন, ‘‘যদি ও কোনও ভাবে ওই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়, তখন কী করব ভেবেই ভয় লাগছে।’’ ইনাদেবী বলেন, “যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ছেলেকে দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করুক সরকার।’’
যাদবপুরের প্রাক্তন গবেষক, সিউড়ির ইন্দিরাপল্লির বাসিন্দা কাজী আরিফ ইসলাম গবেষণার কাজেই গত ৫ নভেম্বর থেকে রয়েছেন উহানে। তাঁকে নিয়েও উদ্বেগে পরিবার। আরিফের বাবা কাজী আব্দুল আলিম জানান, উহান থেকে বেশ কিছুটা দূরে আরিফকে আইসোলেশনে রেখেছে চিন সরকার। নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা হচ্ছে। ভারতীয় হাই কমিশনের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
সাম্যকে দেশে ফেরানোর আর্জির বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আনা হবে বলে আশ্বাস দেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি স্বপন দেবনাথ। বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া বলেন, ‘‘বিশদ তথ্য হাতে এলেই বিদেশ মন্ত্রক ও চিনের ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।