স্বস্তি! পাঁচদিন পর ছেলের সঙ্গে কথা বলতে পারলেন পরিবারের লোকেরা। নিজস্ব চিত্র।
উত্তরাখণ্ডে ট্রেকিং করতে যাওয়া বাঁকুড়ার সাত অভিযাত্রীর সঙ্গে অবশেষে কথা হল পরিবারের। শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই সাত অভিযাত্রী উত্তরাখণ্ডের সাঁকরি থেকে পরিবারকে ফোনে জানালেন, ‘ভাল আছি’। পাঁচ দিন যোগাযোগহীন অবস্থায় থাকার পর অবশেষে কথা হওয়ায় স্বস্তিতে অভিযাত্রীদের পরিবারও।
এ বার পুজোয় বাঁকুড়ার ওন্দা ব্লকের আগড়দা পুরুষোত্তমপুর গ্রাম থেকে সাত অভিযাত্রী ট্রেকিং করতে রওনা দিয়েছিলেন উত্তরাখণ্ড। পরিবার সূত্রে খবর, নবমীর দিন ট্রেন ধরে তাঁরা প্রথমে পৌঁছন দেহরাদুন। সেখান থেকে ১৭ অক্টোবর সাঁকরির উদ্দেশে যাত্রা।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দেহরাদুন থেকে সাঁকরি যাওয়ার পথে তাঁরা বাড়িতে জানিয়েছিলেন সে কথা। সাঁকরি হয়েই হর-কি-দুনে যাওয়ার কথা ছিল তাঁদের। হর-কি-দুন থেকে রুইনসারা তাল পর্যন্ত তাঁদের ট্রেকিং করার পরিকল্পনা ছিল। এর মধ্যেই খবর আসে উত্তরাখণ্ডে ব্যাপক প্রাকৃতিক দুর্যোগের। সেই থেকে বন্ধ যোগাযোগ। গত ১৭ অক্টোবরের পর আর অভিযাত্রীদের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ না থাকায় স্বাভাবিক ভাবেই উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়ে।
টানা পাঁচ দিন তীব্র দুশ্চিন্তায় কাটানোর পর শুক্রবার সন্ধ্যায় সাতটি পরিবারের কাছেই আসে বাড়ির ছেলেদের কুশল সংবাদ। নিশ্চিন্ত হওয়ার পর পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, ‘‘ওঁরা সকলেই খুব ক্লান্ত। মোবাইলেও চার্জ না থাকায়, কেউই বেশি ক্ষণ বাড়ির সঙ্গে কথা বলতে পারেননি। তবে জানিয়েছেন, ‘ভাল আছি’।’’ শনিবার সন্ধ্যায় সাঁকরি থেকে দেহরাদুনে এসে বাংলাগামী ট্রেন ধরার কথা তাঁদের।
অভিযাত্রী দলের অন্যতম সদস্য সবুজবরণ মণ্ডলের বাবা জয়দেব মণ্ডল বলেন, “১৭ অক্টোবর ছেলের সঙ্গে শেষ কথা হয়েছিল। তার পর উত্তরাখণ্ডের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কথা শুনে দুশ্চিন্তা শুরু হয়। নাওয়া খাওয়া ভুলে সারাক্ষণ টিভির পর্দায় চোখ রেখে দিন কাটছিল আমাদের। শুক্রবার সন্ধ্যায় ছেলে ফোন করে বলল ‘ভাল আছি, সমতলে নেমে এসেছি, চিন্তা করো না'।" ছেলেদের ফোন পেয়ে ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ে পরিবারের। সবুজের মা পাপিয়া মণ্ডল বলেন, “গত পাঁচটা দিন যে কী ভাবে কেটেছে, তা কেবল আমরাই জানি। শুধু ছেলের একটা ফোনের অপেক্ষায় বসে থাকতাম।’’ শুক্রবার সন্ধ্যায় ছেলের ফোনে উদ্বেগ কেটেছে। এ বার অপেক্ষা ঘরের ছেলের ঘরে ফেরার।