বাঁকুড়া মেডিক্যালের ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট। নিজস্ব চিত্র
এ বার সরকারি হাসপাতালে দূষিত জল শোধন করে পুনর্ব্যবহার চালু হতে চলেছে। পুজোর আগেই পাইলট প্রকল্প হিসাবে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে নতুন সুপার স্পেশালিটি ব্লকে এই কাজ শুরু হবে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর।
জলসঙ্কটের কথা মাথায় রেখে বাঁকুড়ায় কেন্দ্র-রাজ্য যৌথ উদ্যোগে ১৫০ কোটি টাকায় ২৫০ শয্যা ও সিসিইউ-যুক্ত সুপার স্পেশালিটি ব্লকের পরিকল্পনার সময়ে তার মধ্যেই যুক্ত করা হয় ‘স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট’কে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ছ’তলা এই ভবনে প্রতি তলায় ৫-৬টি করে শৌচাগার থাকছে। এ ছাড়াও প্রতিটি আউটডোরে ও চিকিৎসকদের ঘরের সঙ্গে থাকছে লাগোয়া শৌচাগার। এই সব শৌচাগার থেকে যে জল বেরোবে, তা ট্রিটমেন্ট প্লান্টের মাধ্যমে শোধন করে আলাদা ট্যাঙ্কে জমা করা হবে। সেই পরিশুদ্ধ জল পাইপের মাধ্যমে চলে যাবে সুপার স্পেশালিটি ব্লকের শৌচাগারের সমস্ত সিস্টার্নে। বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধানের কথায়, ‘‘বাঁকুড়া জেলায় প্রকৃতি এমনিতেই রুক্ষ। গ্রীষ্মে খালবিল খটখট করে। তাই এই জেলা দিয়েই প্রকল্প শুরুর পরিকল্পনা হয়েছে। দ্বারকেশ্বর নদী থেকে মেডিক্যাল কলেজে জল পরিবাহী পুরনো পাইপকে পাল্টানোর পাশাপাশি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট তৈরি হয়েছে।’’
অধ্যক্ষ আরও জানান, শৌচাগারে ফ্লাশ করার জন্য এক এক বারে ৫-১০ লিটার জল বেরিয়ে যায়। হাসপাতালে মোট যা জল লাগে, তার ৬০-৭০ শতাংশই এই ভাবে বেরিয়ে যায়। তাই ওই জল শোধন করে সিস্টার্নে ফিরিয়ে দিলে জল বাঁচানো যাবে। ওই জল বাথরুম সাফাইয়েও ব্যবহার করা যাবে। তাঁর কথায়, ‘‘ট্রিটমেন্ট প্লান্টকে ভবিষ্যতে আরও উন্নত করলে পরিশুদ্ধ জল স্নান ও খাওয়ার জন্যও ব্যবহার করা যাবে। এখন এই হাসপাতালে ৮ শয্যার ডায়ালিসিস ইউনিট রয়েছে। তা বাড়িয়ে ২০ শয্যার করা হচ্ছে। তাতেও জলের প্রয়োজন বেড়ে যাবে। ওই জল ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টে শুদ্ধ করে ফের ডায়ালিসিসে ব্যবহার করা হবে।’’
রাজ্যের স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা প্রদীপ মিত্রের কথায়, ‘‘সব মেডিক্যাল কলেজেই ধীরে ধীরে এই প্রকল্প চালু হবে। সবাইকে বলে দেওয়া হয়েছে।’’ মেডিক্যাল কলেজে এই প্রকল্পের জন্য রাজ্যই পুরো টাকা দেবে বলে স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে। স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বৃষ্টির জল সংরক্ষণের সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
গরম জলের ব্যবস্থাও চালু হচ্ছে বাঁকুড়ায়। এখনও রাজ্যের কোনও সরকারি হাসপাতালের শৌচাগারে শীতকালে গরম জলের ব্যবস্থা নেই। বাঁকুড়ায় প্রথম শীতকালে রোগীদের স্নানাগারে সোলার টিউবের মাধ্যমে গরম জল সরবরাহ চালু করা হবে। পুজোর আগে সেটিও চালু হয়ে যাবে বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর।