arrest

arrest: কলকাতা যোগ, ঢাকায় ধৃত কার্ড জালিয়াতির মাথা

 ত্রিপুরা পুলিশ তদন্তের পরে হাকানকে পালাতে সাহায্য করার জন্য ১২ জনকে গ্রেফতার করেছিল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২২ ০৬:২২
Share:

হাকান জানবুরকান।

কলকাতায় গ্রেফতার হওয়ার পরে আগরতলায় পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে পালানো এটিএম কার্ড জালিয়াতির এক পাণ্ডা হাকান জানবুরকান (৫৫)-কে বুধবার ঢাকা থেকে বাংলাদেশের পুলিশ গ্রেফতার করেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারতে এটিএম কার্ড জালিয়াতির অজস্র মামলা এবং পুলিশি হেফাজত থেকে পালানোর ঘটনায় তাকে হেফাজতে নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হলে বিষয়টি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে ঢাকাকে জানানো হবে।

Advertisement

সম্প্রতি ঢাকায় পৌঁছে এ মাসের ২ থেকে ৪ তারিখের মধ্যে তুরস্কের নাগরিক হাকান একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের এটিএম থেকে বিভিন্ন দেশের কার্ডের ক্লোন ব্যবহার করে মোট ৮৪ বার টাকা তোলার চেষ্টা করে। বাংলাদেশ পুলিশ জানিয়েছে, এই ব্যাঙ্কটি ‘অ্যান্টি স্ক্যামিং’ প্রযুক্তি ব্যবহার করায় সে টাকা তুলতে তো পারেইনি, উল্টে তার অজান্তে ছবি তুলে ব্যাঙ্ককে সতর্ক করে দেয় একটি সফটওয়্যার। পুলিশ জানিয়েছে— অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, আমেরিকা, ভারত, তুরস্ক, সৌদি আরব, অস্ট্রিয়া, জার্মানি, ভিয়েতনাম, ব্রিটেন, কানাডা, বলিভিয়া, স্পেন, ফিনল্যান্ড, নরওয়ে-সহ প্রায় ৪০টি দেশের নাগরিকের ক্রেডিট কার্ড ক্লোন করে হাকান এই চেষ্টা চালায়।

এর পরে অনুসন্ধান চালিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের কাউন্টার টেররিজ়ম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট বুধবার ঢাকার গুলশন এলাকা থেকে এক বাংলাদেশি সহযোগী-সহ হাকানকে গ্রেফতার করেছে। তার কাছ থেকে পাঁচটি বিভিন্ন মডেলের ফোন, একটি ল্যাপটপ এবং ১৭টি ক্রেডিট কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশের এক অফিসার জানিয়েছেন, কার্ড ক্লোনিং করে গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট ফাঁকা করে দেওয়ার একটি আন্তর্জাতিক চক্রের মাথা এই তুর্কি নাগরিক। বছর দুয়েক আগে পর্যন্ত সে ভারতের নানা জায়গায় ঘুরে এটিএম ব্যবহার করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়েছে। ২০২০-এর ১৯ নভেম্বর কলকাতা পুলিশের জালে ধরা পড়েছিল হাকান। গ্রেফতার হয় তার দুই বাংলাদেশি সহযোগীও। তার আগে আগরতলায় বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে সে প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করার পরে সেখানে মামলা দায়ের হয়। সেই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত বছর ৯ জুলাই ত্রিপুরা পুলিশ হাকানকে কলকাতা থাকে আগরতলা নিয়ে যায়। সেখানে সে শরীর খারাপের ভান করে হাসপাতালে ভর্তি হয়। এর পরে গোবিন্দবল্লভ পন্ত হাসপাতালের শৌচালয় থেকে রহস্যজনক ভাবে নিপাত্তা হয়ে যায়।

Advertisement

ত্রিপুরা পুলিশ তদন্তের পরে হাকানকে পালাতে সাহায্য করার জন্য ১২ জনকে গ্রেফতার করেছিল। সবিস্তার তদন্তের জন্য বিপ্লব দেব সরকার একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিশনও তৈরি করেছে। হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি স্বপনচন্দ্র দাস ওই কমিশনের চেয়ারম্যান এবং বি কে কিলিকদারকে সদস্য হিসেবে নিয়োগ করা হয়। বাংলাদেশ পুলিশ‌ের এক অফিসার জানিয়েছেন, আগরতলা থেকে পালিয়ে প্রথমে সিকিমে পৌঁছে কয়েক দিন গা ঢাকা দিয়ে ছিল হাকান। ত্রিপুরার এক ভারতীয় নাগরিকই মোটা অর্থের বিনিময়ে তাকে সিকিমে পৌঁছে দেয়। তার পরে সেখান থেকে নেপালে গিয়ে নতুন করে নিজের ট্র্যাভেল ডকুমেন্ট তৈরি করিয়ে তুরস্কে ফিরে যায় এই জালিয়াত শিরোমণি।

নতুন বছরের প্রথমেই সে ঢাকায় এসে পল্টন মোড়ের কাছে একটি হোটেলে ওঠে। সেখানে ইস্টার্ন ব্যাঙ্কের এটিএম ব্যবহার করে টাকা তোলার চেষ্টা করে। কিন্তু তা ব্যর্থ তো হয়ই, হাকান ধরাও পড়ে পুলিশের হাতে। কলকাতা ও আগরতলার পুলিশ তার গ্রেফতার হওয়ার খবর জেনেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement