আনোয়ারুল আজিম। —ফাইল চিত্র।
খাস নিউ টাউনের ফ্ল্যাটে বাংলাদেশি সাংসদ আনোয়ারুল আজিমের খুন নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল দু’দেশেই। সেই ঘটনার তদন্তে সম্প্রতি এ দেশে এসে ডিএনএ নমুনা দিয়ে গিয়েছেন সাংসদের মেয়ে ফিরদৌস মুমতারিন ডোরিন। সিআইডি সূত্রের খবর, উদ্ধার হওয়া দেহাংশ যে সাংসদেরই, তা নিশ্চিত করতে ডিএনএ পরীক্ষা জরুরি। তাই মেয়ের ডিএনএ নমুনা নেওয়া হয়েছে। এই নমুনা আগেই নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাংলাদেশে হাসিনা সরকার বিরোধী আন্দোলন এবং উত্তাল পরিস্থিতির জন্য সাংসদের পরিবারের সদস্যেরা ভারতে আসতে পারেননি। অবশেষে নভেম্বরের শেষের দিকে ফিরদৌস এসে নমুনা দেন। সেই নমুনা সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে। ডিএনএ নমুনা এবং দেহাংশ মিলে গেলে অপরাধের জোরালো প্রমাণ হাতে আসবে বলে তদন্তকারীরা জানান।
সিআইডি জানিয়েছে, গত ১২ মে চিকিৎসা করাতে কলকাতায় এসেছিলেন ঝিনাইদহের আওয়ামী লীগের সাংসদ আনোয়ারুল আজিম। ১৩ মে চিকিৎসা করাতে যাওয়ার নাম করে বরাহনগরের আত্মীয়ের বাড়ি থেকে বেরোন। তার পরেই নিখোঁজ হন তিনি।
১৮ মে বরাহনগর থানায় নিখোঁজের মামলা রুজু হয়। তদন্তে নেমে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ এবং বরাহনগর থানা জানতে পারে, নিউ টাউনের একটি আবাসনে নিয়ে গিয়ে সাংসদকে খুন করেছে কয়েক জন বাংলাদেশি। সেই মামলায় সিআইডি জিহাদ হাওলাদার এবং মহম্মদ সিয়ামকে গ্রেফতার করে। বাংলাদেশ পুলিশ গ্রেফতার করে শিমূল ভুঁইয়া, শেলাস্তি রহমান, ফয়জল এবং মুস্তাফিজুর নামে বাকি অভিযুক্তদের। তবে ওই ঘটনার মূল চক্রান্তকারী এবং সাংসদের বাল্যবন্ধু আখতারুজ্জামান শাহিন ফেরার।
জিহাদ এবং সিয়ামের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই চার্জশিট পেশ করেছে সিআইডি। তাতে তদন্তকারীরা জানান, খুনের পরে সাংসদের দেহের মাংস এবং হাড় পৃথক করেছিল অভিযুক্তরা। ছোট ছোট মাংসখণ্ড কমোডে ফেলে জল ঢেলে দেওয়া হয়েছিল। আর হাড়গুলি ফেলা হয়েছিল ভাঙড়ের বাগজোলা খালে।
এ দিকে, জিহাদ এবং সিয়ামের বিরুদ্ধে তিন মাস আগে বারাসত আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়া হলেও এখনও চার্জ গঠন হয়নি। সিআইডির আশা, শীঘ্রই চার্জ গঠন করে বিচারের প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে। তবে হাসিনা-পরবর্তী বাংলাদেশে ধৃতদের কী অবস্থা, তার কোনও খবর মেলেনি বলেও সিআইডি সূত্রের দাবি।