ফাইল ছবি।
পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির সরকারি হাসপাতাল থেকে বিলি করা হয়েছে বাংলাদেশ সরকারের ওষুধ। তাতে নেই ওষুধ তৈরি ও মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ। ওই ওষুধ খেয়ে রোগ নিরাময় তো দূর অস্ত্, নয়া আতঙ্কে কাঁপছেন রোগীরা।
বেশ কয়েক দিন ধরেই কাঁথি মহকুমা হাসপাতাল থেকে বাংলাদেশে তৈরি সেফ্রাডিন, ডক্সিসাইক্লিনের মতো একাধিক ওষুধ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার হইচই শুরু হতে হাসপাতাল থেকে বাংলাদেশের ওষুধ দেওয়া বন্ধ রাখা হয়। আনন্দবাজার অনলাইনে এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পরই নড়েচড়ে বসে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। কলকাতার সেন্ট্রাল স্টোর থেকে ওষুধ কাঁথির হাসপাতালে পৌঁছেছিল বলে জানা যাচ্ছে। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, সেন্ট্রাল স্টোরের কাছ থেকে এ বিষয়ে জরুরি রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। যদিও ইতিমধ্যেই যাঁরা বাংলাদেশি ওষুধ পেয়ে তা খেয়েও ফেলেছেন, তাঁদের পরিজনেরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। ওষুধের গুণমান ঠিক ছিল কি না এই প্রশ্নের পাশাপাশি ওষুধ খেয়ে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হবে না তো, তা নিয়েও আশঙ্কার দোলাচলে রোগীর আত্মীয়রা।
ইতিমধ্যেই তাঁরা এ নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন কাঁথি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে। অনেক রোগীর পরিবার আবার দ্বারস্থ হয়েছেন অন্য চিকিৎসকদের। সকলেরই দাবি, সরকারি হাসপাতাল থেকে বাংলাদেশের যে ওষুধ বিলি হয়েছে, তার গুণমান যাচাই করে দ্রুত জানাক সরকার। ওষুধ কবে তৈরি হয়েছে, সেগুলির মেয়াদ ঠিক কত দিন তাও খতিয়ে দেখা হোক। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, বুধবার কাঁথি হাসপাতালে গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখতে আসছেন ডেপুটি সিএমওএইচ (তৃতীয়) ও এসিএমওএইচ পদমর্যাদার দুই স্বাস্থ্য আধিকারিক।
এ দিকে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, তমলুক জেলা সদর হাসপাতালের মূল স্টোর থেকে বাংলাদেশি ওষুধ কাঁথি হাসপাতালে সরবরাহ করা হয়েছে। আবার জেলা স্টোরে ওষুধগুলি এসেছিল কলকাতার সেন্ট্রাল স্টোর থেকে। স্বাস্থ্য দফতরের ওই সূত্র জানিয়েছে, করোনাকালে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ থেকে কিছু ওষুধ রাজ্যে এসেছিল। তবে পরবর্তীকালে বাংলাদেশ থেকে ওষুধ আমদানি হয়েছে কি না, সে বিষয়ে কারও স্পষ্ট ধারণা নেই। তাই কাঁথির সরকারি হাসপাতালের ওষুধের ভান্ডারে সেই সময় আনা পুরনো ওষুধ পৌঁছেছে কি না, তা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে। সব মিলিয়ে কাঁথির হাসপাতালে বাংলাদেশি ওষুধ নিয়ে তোলপাড়।